নিজস্ব প্রতিবেদন : দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গ একই রাজ্যে হলেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাওয়ার ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা পাড়ি দিতে হয়। বিরাট এই দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার জন্য অধিকাংশ মানুষ ট্রেনের (Train) উপর নির্ভর করে থাকেন। তবে ট্রেনের উপর নির্ভর করে থাকলেও সবচেয়ে কম সাড়ে সাত ঘন্টায় হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছানো যায়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস (Vande Bharat Express) ট্রেনে চড়ে গেলেও এতটা সময় লাগে। অন্যান্য সাধারণ ট্রেনের কথা ধরলে হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যেতে সময় লাগে ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত।
তবে এই দূরত্ব এবার কমতে চলেছে ভারতীয় রেলের একটি উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে। ভারতীয় রেলের (Indian Railways) তরফ থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়ার ফলে যেমন দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের দূরত্ব কমবে ঠিক সেই রকমই আবার দুই বঙ্গে থাকা অন্যান্য জেলাগুলির মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও দূরত্ব কমে যাবে। রেলের এই উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বা এই ধরনের দ্রুতগামী ট্রেন অন্ততপক্ষে আধ ঘন্টা আগে গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। অন্যান্য ট্রেনের ক্ষেত্রে সময় বাঁচবে আরও অনেক বেশি।
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এমন বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসছে মূলত মুর্শিদাবাদ জেলার কারণে। এই জেলাতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এখন রেলের তরফ থেকে তৈরি করা হচ্ছে নশিপুর রেল ব্রিজ। এই ব্রিজ নির্মাণের কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে বলেই জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি নশিপুর আজিমগঞ্জ দিকে স্লিপার বসানোর কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।
রেলমন্ত্রী হিসেবে লালুপ্রসাদ যাদব থাকাকালীন এই রেল ব্রিজ নির্মাণের কাজের শিলান্যাস হয়। তবে এরপর বছরের পর বছর পেরিয়ে যায় কিন্তু ব্রিজ নির্মাণের কাজ আর শুরু হয় না। শেষমেষ গত বছর এই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে রেল। অবশেষে এক বছরের মধ্যেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ অনেকটাই এগিয়ে যায় এবং সেই কাজ এখন শেষের দিকে।
ব্রিজ নির্মাণের জন্য জমিদাতারা অনেক বিক্ষোভ দেখান এবং ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে থাকা সাত একর জমি দিতে অস্বীকার করার ফলে কাজ আটকে যায়। তবে সেই সমস্যা এখন দূর হয়েছে এবং রেল ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে দ্রুত গতিতে শেষ হতে চলেছে। এই ব্রিজটি নির্মাণ হলে শিয়ালদা থেকে আজিমগঞ্জ হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে দূরত্ব অন্ততপক্ষে ২১ কিলোমিটার কমে যাবে। যাত্রীদের ৫৭৪ কিলোমিটারের পরিবর্তে ৫৫৩ কিলোমিটার যাত্রা করতে হবে।