নিজস্ব প্রতিবেদন : একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বঙ্গ দখল করার লক্ষ্যে উঠে-পড়ে নেমেছিল বিজেপি। তবে ভোটের ফলাফল তাদের সামনে এনে দিয়েছে কেবল হতাশা। সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূরের কথা বরং লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে যে সংখ্যক আসন পাওয়ার কথা ছিল তাও নাগালে আসে নি।
সর্বশক্তি প্রয়োগ করে, কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রচারে নামিয়ে, এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর একাধিক প্রচার সত্ত্বেও কেন এইভাবে হারের মুখ দেখতে হলো তার কারণ খুঁজতে এবার আসরে খোদ টিম শাহ। আর এই কারণ খুঁজতে গিয়ে সমীক্ষায় উঠে এসেছে একাধিক তথ্য যা রীতিমতো চিন্তায় ফেলেছে গেরুয়া শিবিরকে। সূত্র মারফত এমনটাই জানা যাচ্ছে।
সূত্র মারফত এটাও জানা গিয়েছে, বিজেপির টিকিটে যারা ভোটে জয়লাভ করে বিধায়ক হয়েছেন তাদের মধ্যে নাকি অনেকেই শিবির ত্যাগও করতে পারেন। এই আভ্যন্তরীণ সমীক্ষা গেরুয়া শিবিরের চিন্তার কারণ হওয়ার পাশাপাশি ভোট পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠন নিয়েও বেশ অনিশ্চয়তার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই আভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় ১২৮ পাতার একটি রিপোর্টে বিজেপির হারের একাধিক কারণ তুলে ধরা হয়েছে। তবে যেগুলি গুরুত্বপূর্ণ সেগুলি হল,
১) দলবদল করে বিজেপিতে আসাদের ভাবমূর্তি ভালো নয়। তাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকার পাশাপাশি তাদের নিজেদের কোনো জনসমর্থন নেই। এই সকল নেতা-নেত্রীরা যেমন ভোটে জয়লাভ করতে পারেননি ঠিক তেমনি তারা আবার তৃণমূলের ফিরে যেতে পারেন।
২) জেলা বিজেপির নেতা বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং দম্ভ সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেননি।
৩) পুরাতন বিজেপি নেতা কর্মীদের তুলনায় দলবদল করে আসা নতুন বিজেপি নেতা কর্মীদের প্রভাব অনেকটাই বেশি ছিল। যে কারণে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।
৪) একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে রাজ্যের সেভাবে সক্রিয় হয়নি আরএসএস।
৫) নির্বাচনী তহবিল অর্থাৎ ভোটের খরচ সেই ভাবে ব্যবহার করা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতাদের থেকে জানা গিয়েছে, বিজেপি সরাসরি প্রার্থীদের হাতে টাকা দিয়ে থাকে নির্বাচনী খরচের জন্য। সেক্ষেত্রে তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমতোই তা খরচ করে থাকেন।
৬) জয় শ্রীরাম ধ্বনিও অনেকটা ব্যাকফুটে ফেলেছে বঙ্গ বিজেপিকে। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় সৃষ্টি করেছিল ভোটের সময়।
৭) ভাষাগত সমস্যা আরও একটি বড় কারণ হিসাবে ধরা হয়েছে সমীক্ষায়। ভিন রাজ্যের নেতাদের ভাষা এখানকার মানুষ বোঝে নি।
৮) ক্ষমতায় না এসেই বিজেপি নেতাদের মধ্যে দম্ভ তৈরি হওয়া ভোটে হারের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।