সরকারি নিয়মেই বিপাকে সরকার! টাটার ঘরে মুনাফা, রাজ্যের কোষাগার থেকে খসবে বিপুল অর্থ

আমূল বদলে যেতে চলেছে রাজ্যের বাস পরিবহন ব্যবস্থা। বদলে যেতে চলেছে বেশ কিছু বাসের ভবিষ্যৎ। সম্প্রতি বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। নবান্নের এই সিদ্ধান্তে যাত্রীদের সুবিধা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বড় সংখ্যক নতুন বাস নামাতে চলেছে পরিবহন দপ্তর। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষকে পরিষেবা দিতে আসছে হাজারের বেশি নতুন বাস। আবার আগামী এক বছরের মধ্যেই বহু সংখ্যক বাস বাতিল করে দিতে চলেছে রাজ্য।

যদিও ফিরহাদ হাকিম পরিবহন মন্ত্রী থাকাকালীন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যার বাস্তবায়ন হচ্ছে রাজ্যের বর্তমান পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তীর আমলে। রাজ্যবাসী আগামী এক বছরের মধ্যে ৫০০ এসি বাস পেতে চলেছেন। সেই বাসগুলি আবার অনেকখানি পরিবেশবান্ধব। একইসঙ্গে নন এসি ৬৪০ টি পরিবেশবান্ধব বাস পেতে চলেছে বাংলা। সরকারি নিয়মের জন্যই নতুন বাস নামাতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে।

পরিবহন দফতরের এই সিদ্ধান্তে যাত্রীরা ভালো পরিষেবা পাবেন বটে, পরিবেশের পক্ষেও কিছুটা তা ভাল হবে। তবে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে বসবে অনেক টাকা। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে নতুন বাস পেতে শুরু করবেন বাংলার মানুষ। অন্যদিকে দীর্ঘদিন মানুষকে পরিষেবা দেওয়া বাসগুলি বিদায় নেবে। বিএস ৪ মডেলের বাস গুলি বাতিল করে নিয়ে আসা হবে বিএস ৬ মডেলের বাস। আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন রাস্তায় চলাচল করা ডিজেল বাসগুলি বাতিল করা হবে। যদিও সব ডিজেল বাস বাতিল করা হবে না। বাতিল করা হবে ১৫ বছরের পুরনো ডিজেল চালিত বাসগুলিকে।

জানা গিয়েছে, আগামী এক বছরের মধ্যেই ডিজেল-চালিত বাস পুরোপুরি বাতিল করে পরিবর্তে ১,১৮০টি ই-বাস চালু করা হবে। কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রকের আওতায় থাকা এনার্জি কনভার্জেন্স এনার্জি সার্ভিসেস লিমিটেডের (সিইএসএল) মধ্যস্থতায় রাজ্য পরিবহণ দফতরকে এই বাস জোগান দেবে টাটা মোটর্স। গত বছরই পরিবহণ নিগম ও টাটা মোটর্সের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যে আরও ১০০-র বেশি সিএনজি বাস নামানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে বলে খবর।

বাস নিয়ে কেন এই সমস্যা? ১৫ বছরের পুরনো গাড়িগুলিকে সরকারি নিয়মে বাতিল করতে হচ্ছে। বিএস-৪ থেকে গাড়িগুলিকে বিএস-৬ মডেলে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ আছে। ফিরহাদ হাকিম পরিবহন মন্ত্রী থাকাকালীন এই চুক্তিতে সই হয়। টাটা মোটর্সের তৈরি করা যে ই-বাসগুলি রাজ্য পরিবহণ দফতর পেতে চলেছে তার মধ্যে ৫০০টি বাস এসি এবং বাকি ৬৮০টি নন-এসি। দ্রুত সেই বাস দিল্লি থেকে কলকাতায় চলে আসার কথা। প্রথম দফার ৫০০টি বাস ২০২৩-এর মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই শহরে ঢুকে পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, টিকিট কেটেও বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। পরিষেবা নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ। SBSTC-র উপর ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে, WBTC বাস নিয়েও অভিযোগের শেষ নেই। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে স্টপেজে আসছে বাস। গত কয়েকমাস ধরে সরকারি বাস পরিষেবা নিয়ে তিতিবিরক্ত যাত্রীরা। পরিবহণ দফতরেও এই নিয়ে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ জমা পড়েছে। একদিকে চাঁদিফাটা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত পথে বেরনো মানুষের। তারপর রাস্তায় বাস কম থাকায় বাদুরঝোলা ভিড় ঠেলেই অফিসে যেতে হচ্ছে অনেককে। তবে নতুন বাসগুলি এলে সমস্যা সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।