বহু ক্ষেত্রে পরিযায়ী শ্রমিকদের ডিমান্ড বেশি, ‘জামাই আদর’-এর ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে : শতাব্দী রায়

লাল্টু : ‘পরিযায়ী শ্রমিক’ আর ‘জামাই আদর’, এই দুই প্রসঙ্গ নিয়ে গতকাল রাজ্য রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী রায়ের মন্তব্যে। তবে রবিবার দুবরাজপুরে শতাব্দি রায় জানান, ‘আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই পরিযায়ী শ্রমিকদের ডিমান্ড বেশি রয়েছে। সেগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়।’

গতকাল সাঁইথিয়ায় দাঁড়িয়ে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী রায় ঠিকই কি বলেছিলেন একবার দেখে নেওয়া যাক। শনিবার সাঁইথিয়ায় শতাব্দি রায় পরিযায়ী শ্রমিকদের কোয়ারেন্টাইন থাকা অবস্থায় দাবি-দাওয়া নিয়ে বলেছিলেন, “হাজার হাজার লোকের প্রবলেম তো, সবাই যদি জামাই আদর চায় তাহলে মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। মাছ দিলে বলছে মাংস হয়নি, মাংস দিলে বলছে ডিম হয়নি। এখন সবাই অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে, এতদিন পরে ওখান থেকে ফিরছে, বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হচ্ছে। আপনার বাড়িতে যদি একজন আসে যে যত্নটা করতে পারবেন, হাজার লোক এলে তা করতে পারবেন না। সেজন্য এই ক্ষোভ-বিক্ষোভগুলি নিজস্ব তৈরি করা হয়েছে অথবা এখন তো বাঁচার লড়াই তাই বেশ কিছুটা মানিয়ে নিতে হবে। তারা বাড়ি যাওয়ার জন্য অস্থির হচ্ছে বলে এগুলি করছে।” শতাব্দী রায়ের এহেন মন্তব্য নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে বীরভূম জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মন্ডল, কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি সঞ্জয় অধিকারী ও রাজ্য স্তরের বিরোধী নেতারা এর নিন্দা করেন। অনেকেই শতাব্দী রায়ের মন্তব্যকে বীরভূমবাসীদের লজ্জা বলে আখ্যা দেন, আবার কেউ তাকে বয়কটের ডাক তোলেন। এরপরই রবিবার শতাব্দি রায় জানান, ‘আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে’।

মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে এদিন তিনি জানান, “সবাই আমার পুরো ইন্টারভিউটি দেখেননি। ফেসবুকে কিছু উক্তি করে লিখে দেওয়া, কিছু স্পেসিফিক শব্দকে ব্যবহার করে এটা করা হচ্ছে। আমি ঠিক কি কথা বলেছি আদৌ সবাই শোনেন নি আর বোঝার চেষ্টা করেননি। আমি বলেছি যে, যদি আপনার বাড়িতে একজন লোক আসে যেভাবে তাকে সুযোগ সুবিধা দিতে পারবেন, যত্ন করতে পারবেন, হাজার লোক এলে সেই সুযোগ সুবিধা দিতে পারবেন না বা যত্ন করতে পারবেন না। এবার এত লোক আসছে, এত পরিযায়ী শ্রমিক আসছে তারা যদি জামাই আদর চায় তাহলে সেটা সম্ভব নয়। বিডিওদের সাথে কথা বললেই বুঝতে পারবেন বহু ক্ষেত্রে তাদের ডিমান্ড অনেক বেশি থাকছে। যারা চাইছে না তাদের তো নয়। এটা সবার জন্য বলছি না, যারা চাইছে এটা খাবো না, ওটা খাবো না। এইতো এখনই শুনলাম, সপ্তাহে দুদিন বিরিয়ানি দিতে হবে বলছে। তাহলে এই চাওয়াগুলো তো সম্ভব নয়। সেই ক্ষেত্রেই বলেছি জামাই আদরটা সম্ভব নয়।”

পাশাপাশি তিনি জানান, “আমি নেগেটিভ ভাবে বলিনি, নেগেটিভ ভাবে করা হচ্ছে। আমি বলেছি যে, সবাই এখন অস্থির হয়ে রয়েছে, সবাই এখন বাড়ি ফেরার তাড়ায় রয়েছে। তার জন্য সবাই ডিস্টার্বড বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সেটাকে হাইলাইট না করে যেটাকে হাইলাইট করা হচ্ছে সেটা ভুল ইন্টারপ্রেট করা হচ্ছে। আমার কথাকে ভুল মানে করা হচ্ছে, ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। ভুলভাবে উক্তিটাকে স্পেসিফাই করা হচ্ছে।”