নিজস্ব প্রতিবেদন : হুগলির ইটাচুনা গ্রামের আদিবাসী কিশোরী চাঁদমণি হেমব্রম অসাধারণ গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিল। অভাবের সংসারে দু’মুঠো ভাত জোগাড় করাই যেখানে মুশকিল, সেখানে গান শেখা তো রীতিমত স্বপ্ন। না গানের কোনো প্রশিক্ষক ছিল না তার।
তবে ছোট থেকেই গানের প্রতি রবীন্দ্র সংগীতের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। তাই পাশের বাড়ির দাদুর সাউন্ড বক্সের গান শুনেই সে গান শেখে ফেলেছিল। অভাব তার প্রতিভাকে দমিয়ে দিতে পারেনি। নেহা কক্করের ‘ও হামসফর’ গানটি গেয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় তা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চাঁদমনির এই গান শুনেই বলিউডের শিল্পীরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর সারদেশ্বরী কন্যা বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণীর ছাত্রী চাঁদমণি পাড়ি দেয় বলিউডে। তার এই বিখ্যাত হওয়ার পথে তাকে বরাবর সহায়তা করেছিল দুর্গাপুরের চিরঞ্জিত ধীবর ও হুগলির শ্যাম হাঁসদা।
শ্যামবাবু ত্রাণ বিলি করতে এসে চাঁদমনির গান রেকর্ড করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন অপরদিকে দুর্গাপুরের স্কুলশিক্ষক চিরঞ্জিতবাবুও ফেসবুক পেজ থেকে চাঁদমনির গান শেয়ার করেন পরবর্তীকালে চিরঞ্জিত বাবুর মাধ্যমেই বলিউডে শিল্পীরা চাঁদমণির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পাঞ্জাবের খ্যাতনামা শিল্পী আয়শান আদ্রির মিউজিক ডিরেকশনে আরবান স্বরাজের লেখা চাঁদমণির প্রথম গান ‘জুদাইয়া বে’ রেকর্ড হয়।
বছর দশেক আগে বাবা মারা যাওয়ার পর অভাবের সংসারে অন্ন সংস্থানের জন্য মা মালতি হেমব্রমের সাথে মাঠে ধান রোয়ার কাজ করতো চাঁদমণি, আর গুন গুন করে গাইতো গান আর এই গানই তাকে পরিচিতি এনে দিলো। সম্প্রতি নেহা কক্করের সঙ্গেও গান গেয়েছে চাঁদমণি আর এই গান সোশ্যাল মিডিয়ায় মুহূর্তের মধ্যে হয়ে গেছে ভাইরাল।
নেহা কক্করের গান গেয়েই প্রথম ভাইরাল হয়েছিল চাঁদমণি। আজ নেহা কাক্কার এর সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘মিলে হো তুম হামকো’ গান গেয়েছে সে। এও চাঁদমণির এক স্বপ্নপূরণ। ভিডিওটি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই এক কোটিরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছেন ভিডিওটি। দুজনের অসাধারণ গলায় গান শুনতে শুনতে আবেগে ভাসলেন নেটিজেনরা।