কর্মরত অবস্থায় মৃতের চাকরির অধিকার নিয়ে হাইকোর্ট

Madhab Das

Published on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : কর্মরত অবস্থায় কোন চাকরিজীবীর মৃত্যু হলে সেই চাকরি কি তার পরিবারের কোনো সদস্য অর্থাৎ স্ত্রী-পুত্র অথবা কন্যা সন্তানের অধিকারে পরে? তারা কি সেই চাকরির দাবি করতে পারেন? এই সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি রায় দেন।

Advertisements

ভবানী শংকর বোস নামে এক ব্যক্তি পুলিশে কর্মরত অবস্থায় ২০১৩ সালে মারা যান। এরপর সেই বছরই মার্চ মাসে মৃত পুলিশকর্মী ভবানী শংকর বোসের বিবাহিতা কন্যা বন্দনা ঘোষ ডাইং হারনেস (Dying Harness) কোটায় চাকরির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তার আবেদন নাকচ করে দেন কলকাতা পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ।

Advertisements

আবেদন নাকচ করার কারণ হিসাবে ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ জানান, যেহেতু আবেদনকারী বিবাহিতা কন্যা ডাইং হারনেস কোটায় চাকরির দাবীদার হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আর এই যুক্তির পর চাকরির দাবিদার বন্দনা ঘোষের সামনে আর কোন পথ খোলা ছিলো না। কিন্তু এই ঘটনাটি মোড় নেয় ২০১৭ সালে।

Advertisements

২০১৭ সালে হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বে একটি বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ কর্মরত ব্যক্তির চাকরি নিয়ে একটি ঐতিহাসিক রায় দেয়। যে রায়ে বলা হয় বিবাহিতা মেয়েও মৃত ব্যক্তির চাকরির দাবিদার হতে পারেন। এই রায় দেয় বিচারপতি নিশিথা মাত্রে, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর বিশেষ বেঞ্চ।

আর এই রায়কে হাতিয়ার করে বন্দনা ঘোষ পুনরায় ২০১৯ সালে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন চাকরির জন্য। বন্দনা ঘোষের আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে দাবি করেন, বন্দনা দেবী পুনরায় চাকরির জন্য আবেদন করেছেন আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে। আদালত একটি বিশেষ রায় জানিয়েছিল মৃত ব্যক্তির চাকরির জন্য দাবি করতে পারেন বিবাহিতা কন্যাও।

কিন্তু আদালতের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে বিবাহিতা কন্যা তখনই মৃতের চাকরির দাবিদার হতে পারেন যখন তিনি বিবাহ বিচ্ছিন্না বা স্বামী পরিত্যাক্তা অথবা বিধবা হয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেবেন। এক্ষেত্রে তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এর পাশাপাশি আদালতের তরফ থেকে এটাও জানানো হয়েছে, মৃত ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রী পেনশন পাচ্ছেন। সুতরাং তাৎক্ষণিক অর্থকষ্ট রয়েছে এমনটাও বলা যাবে না। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই মামলাটি খারিজ করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisements