করোনাকালে উৎসবে নবীন ও প্রবীণদের জন্য যেসকল সতর্কতা মানতেই হবে

Sangita Chowdhury

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : কোভিড ১৯ ভাইরাস থেকে সবথেকে বেশি ঝুঁকির আশঙ্কা প্রবীণ মানুষ ও শিশুদের। কারণ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন কম থাকে, প্রবীণ মানুষদেরও তেমনি নানা রকম রোগ থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়।

Advertisements

সামনে পুজো আসছে। এই পুজোয় ছোট বড় সকলের ভিড় এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ পুজোর কেনাকাটা করতে গিয়েই রাজ্যে কোভিড সংক্রমণের হার বেড়েছে ৭.১২ শতাংশ, সেক্ষেত্রে দুর্গাপুজোর পর যে সংক্রমণের হার কীভাবে বাড়বে তা ভাবলেই আঁতকে উঠতে হয়। চোখের সামনে দৃষ্টান্ত আছে কেরল। কেরল রাজ্যে নিয়ন্ত্রিত সংক্রমণের হার পর্যন্ত ওনাম উৎসবের পরে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার পুজো সম্পর্কে সতর্ক করছেন মানুষকে। কিন্তু কাকস্য পরিবেদনা কে কার কথা শোনে!

Advertisements

বাজার করার হুজুক দেখেই বোঝা যাচ্ছে দুর্গা পুজোতে এবার ঠিক কি হতে চলেছে। তবে সমস্ত বয়সের মানুষদের মধ্যে এই করোনা আবহে প্রবীনদের কথা ভেবে চিন্তা আরও ঘনীভূত হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। প্রবীণদের যে বিশেষ ভাবে সর্তকতা অবলম্বন করতেই হবে সে কথা বলাই বাহুল্য। এ বছর পুজোয় নবীন ও প্রবীণ মানুষদের ঠিক কী কী সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন মুখ খুলেছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisements

বিশেষজ্ঞদের দেওয়া গাইডলাইন যা প্রতিটি প্রবীন মানুষের মেনে চলা কর্তব্য-

১) বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পুজোর প্যান্ডেল ভিড় থাকলে খুদে বা প্রবীণদের ভুলেও সেখানে যাওয়া যাবে না‌। প্যান্ডেলে যেতে ইচ্ছা করলে সকাল বা দুপুরে যখন প্যান্ডেল ফাঁকা থাকে তখন একবার ঘুরে আসা যেতে পারে। কিন্তু ভিড় নৈব নৈব চ।

২) বৃদ্ধ মানুষদের ওষুধ চিকিৎসা সংক্রান্ত কোন বিষয় বাইরে বেরোতে হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

৩) বেশিরভাগ বয়স্ক মানুষদের হাঁটুর ব্যথা থাকে। সে ক্ষেত্রে পাড়ার প্যান্ডেল ফাঁকা দেখে মাটিতে বসা উচিত হবেনা। প্রয়োজন হলে চেয়ারে বসা যেতে পারে অথবা সম্ভব হলে দাঁড়িয়ে থাকা যেতে পরে।

৪) বেশি বয়সের মানুষরা হাঁটু বা কোমরের ব্যথায় কষ্ট পেলেও প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার সময় বেল্ট ব্যবহার করতে চান না। তবে এই সকল ক্ষেত্রে নি ক্যাপ, লাম্বার বা সার্ভাইক্যাল বেল্ট ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাঁটুর ব্যথাতে কাবু হলে ঠান্ডা সেঁক ও কোমরের ব্যথায় কাবু হলে গরম সেঁক দিলে আরাম বোধ হয়।

৫) হাঁটু ব্যথা জাতীয় ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ঔষধ অথবা প্যারাসিটামল সাথে রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

৬) পুজো প্যান্ডেলে ৮৫ ডেসিমেলের উর্দ্ধে মাইকের সাউন্ড হলে সেটা শিশু থেকে বয়স্ক যেকোনো কারোর ক্ষেত্রেই হৃদরোগের কারণ হতে পারে। আর করোনা আবহের মধ্যে শারীরিক অসুস্থতা বৃদ্ধি পেলে মানুষকে নাজেহাল হতে হবে। তাই এক্ষেত্রে সাউন্ড কম করার জন্য পুজো কমিটিকে অনুরোধ করতে হবে।

৭) পুজো প্যান্ডেলে থাকা ধূপধুনোর ধোঁয়াতেও হাঁচি-কাশির সম্ভাবনা থাকে। তাই ধুপধুনো থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

৮) পুজোর হুজুগে মেতে ওষুধ খাওয়াতে অনিয়ম করলে রোগ আরও বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ঝামেলা আরো বাড়বে বৈ কমবে না তাই সমস্ত বিষয় মাথায় রেখে নিজের ক্ষেত্রেও নিজের ওষুধের ক্ষেত্রে কোনো রকম অবহেলা করা যাবে না।

৯) এছাড়া বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ যে কতগুলি অসুখ কোনরকম উপসর্গ ছাড়াই হতে পারে। যেমন বুকে ব্যথা বা চাপ ধরা ভাব নিঃশ্বাসের কষ্ট আর দরদরিয়ে ঘাম ঝরা হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ। তবে বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে কোনো রকম লক্ষণ ছাড়াই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। হয়ত কোন প্রবীণ মানুষ হঠাৎই কথা বলতে বলতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেলেন। এটি ব্রেন স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন কোনো রকম শারীরিক সমস্যা হলেই তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

১০) বৃদ্ধ মানুষ যদি হঠাৎ করে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন বা অদ্ভুত আচরণ করেন তাহলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য কমে গেলে এমনটা হতে পারে। তাই প্রবীণ মানুষদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোন বিষয়ে কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সর্বোপরি ছোট বড় সকল বয়সের মানুষদেরকেই চিকিৎসকদের পরামর্শ যে পুজো যেন ভার্চুয়ালি হয়। প্যান্ডেল পরিদর্শন, ভীড়ের মধ্যে ঘোরা থেকে নিজেকে আটকাতে হবে। আর প্যান্ডেলে গেলেও সকাল বা দুপুর টাইমে যখন ভীড় নেই তখন একবার গিয়ে ঘুরে আসা যেতে পারে।

Advertisements