নিজস্ব প্রতিবেদন : বৌভাতের ভোরে পাঁচিল টপকে পালালো নববধূ। জনপ্রিয় ‘টুম্পা সোনা’ গানের মতই ঘটনা এবার নজরে এলো বাস্তবে। টুম্পা সোনা গানের ‘বেনারসি শাড়ি পরিয়ে-সিঁথিতে সিঁদুর দিয়ে, তারাপীঠে গিয়ে করেছিলাম বিয়ে, রাতে ফুলশয্যা হলো-তারপরে সকাল হলো, ঘুম থেকে উঠে দেখি বউ পালালো জানলা দিয়ে’ কলির বাস্তবায়ন দেখা গেল।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশিরা হতবাক হওয়ার পাশাপাশি লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে পড়েছে বরপক্ষের। এমন ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের মানিকতলা এলাকায়। ওই এলাকার বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী বছর চব্বিশের সায়ন মণ্ডলের সঙ্গে হুগলি জেলার কোন্নগরের বাসিন্দা উন্নতি অধিকারীর বিয়ে হয় গত বৃহস্পতিবার।
বৃহস্পতিবার হাসিমুখে দুজনে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বাঙালি রীতি নীতি অনুসারে এই বিয়ে হওয়ার কারণে শুক্রবার ছিল কাল রাত্রী। কাল রাত্রিতে দুজনের মুখ দেখাদেখির নিয়ম না থাকায় সায়ন নিজের নতুন বউকে বাড়িতে রেখে পাশের এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়েছিলেন রাত কাটাতে। শনিবার সকালে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে তিনি খবর পান, তার নতুন বউ পাঁচিল টপকে রেললাইন ধরে পালিয়ে গিয়েছেন।
ঘটনার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করে ঘন্টা দুয়েক বাদে তার খোঁজ মেলে অশোকনগর বাসস্ট্যান্ডের কাছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বধূ একটি বাসেও উঠে পড়ে ছিলেন। কিন্তু কন্ডাক্টরের সন্দেহ হওয়ার কারণে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেন। এরপর ওই নববধূকে ফের নিয়ে আসা হয় শ্বশুর বাড়িতে। সেখানে তাকে পালিয়ে যাওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তিনি অন্য একটি ছেলেকে ভালোবাসেন এবং তাকে বিয়ে করবেন।
নববধূর এমন দাবি শুনে শেষ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ির লোকজন ওই নববধূর বাপের বাড়িতে খবর দেন। এর পাশাপাশি খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে সায়ন মণ্ডলের পরিবারের লোকজন ওই নববধূকে তুলে দেন তার বাপের বাড়ির লোকজনের হাতে। এমন ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই হতবাক সায়নের আত্মীয়-স্বজনরা। বিয়ের বৌভাতের মেনুতে বিরিয়ানি, চিকেন কষা বিভিন্ন আইটেম ছিল যা একপ্রকার জলে গেল বলেই জানিয়েছেন সায়নের দাদা। এর পাশাপাশি সায়নের দিদা শোভা মন্ডল জানিয়েছেন, ‘৭৫ বছর বয়স হল। অনেক কিছু দেখলাম। তবে এই রকম ঘটনা এই প্রথম দেখলাম।’