বিশেষ কারণে রাজস্থানের দেবমালি গ্রামে নেই একটিও পাকা বাড়ি, বিদ্যুৎ

Madhab Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজস্থানের দেবমালি গ্রাম ভারতের অন্যান্য পাঁচটা গ্রামের মতোই। তবে এই গ্রামের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, গ্রামের কোথাও কোনো পাকা বাড়ি নেই, এমনকি আশেপাশের গ্রামগুলি রাতের অন্ধকারে বিদ্যুতের আলোয় ঝকঝক করলেও এখানে সূর্য ডুবলেই অন্ধকার। কিন্তু কেন? এর পিছনে রয়েছে এক বিশেষ কারণ।

আর এই বিশেষ কারণটি হলো বিশ্বাস। আর এই অদ্ভুত কারণের জন্যই এই গ্রামে কোন বাড়ি পাকা নয় এবং বিদ্যুৎ ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছেন এখানকার মানুষেরা। এই গ্রামের বাসিন্দারা হলেন ভগবান নারায়ণের উপাসক।

গ্রামটিতে বর্তমানে মোট ৮০ টি পরিবার বসবাস করেন। অন্যান্য গ্রামের মতো এখানকার গ্রামবাসীদের মূল জীবিকা হল কৃষিকাজ। তবে গ্রামের কোন বাসিন্দার নামে কোনো জমি নেই। চাষের জমি এবং নিজেদের বসতবাড়ির সমস্ত জমি রয়েছে ভগবান দেব নারায়ণের নামে। কেবলমাত্র নিজেদের অংশের এলাকাগুলি চিহ্নিত করা থাকে যাতে বুঝতে অসুবিধা না হয়। আর গ্রামবাসীরা বিশ্বাস করেন বিলাসিতায় গেলে ভগবান নারায়ণ তাদের উপর রুষ্ট হবেন। যে কারণে পাকা বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ কোন কিছু হয়নি এই গ্রামে। আর এই বিশ্বাসের পিছনেও রয়েছে একটি কারণ।

গ্রামবাসীদের মুখ থেকে জানা গিয়েছে, একবার গ্রামের এক বাসিন্দা একটি পাকা বাড়ি তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই গোটা বাড়ি ভেঙে পড়ে যায়। যার পর থেকে এখানকার মানুষদের মধ্যেই বিশ্বাস জন্মায় ভগবান এই গ্রামে পাকা বাড়ি চান না। আর সেই ধারণার বসেই এখনো পর্যন্ত আর কেউ পাকা বাড়ি তৈরি করার দিকে এগোননি।

তবে শুধু পাকা বাড়ি আর বিদ্যুৎ নেই এমনটা নয়, পাশাপাশি এই গ্রামে নেই কোনো রকম রান্নার গ্যাসের ব্যবস্থা। রান্নার গ্যাসের ব্যবস্থা তো দূরের কথা কয়লা পর্যন্ত ব্যবহার করেন না এখানকার গ্রামবাসীরা রান্নার জন্য। পরিবর্তে তারা রান্নার জন্য কাঠের জ্বালানি ব্যবহার করে থাকেন।

যদিও ওই গ্রামবাসীদের এমন বিশ্বাস এবং ধারণা নিয়ে বর্তমান আধুনিক যুগে নানান বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তা সত্ত্বেও এখানকার বর্তমান যুবকেরাও তাদের প্রাচীন প্রথার বাইরে যেতে চান না। আর এই প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী এই গ্রামে এখনো পর্যন্ত আমিষ খাবার এবং মদ নিষিদ্ধ।