নিজস্ব প্রতিবেদন : বোলপুর সফর শেষ করে বুধবার কলকাতায় ফেরার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আচমকা শান্তিনিকেতন লাগোয়া বল্লভপুর ডাঙ্গা নামের একটি আদিবাসী পাড়ায় পৌঁছান। সেখানে তিনি একটি চায়ের দোকানে গরম চায়ে চুমুক দেন, পাশাপাশি হঠাৎ খুন্তি হাতে রান্না করতে শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি এলাকার মহিলাদের সাথে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা দাবি করেছেন, “খুব ভালো কথা। কিন্তু মজার ব্যাপার হল যে যখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলু বরবটি রান্না করছেন তখন বাবু বাগদির পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞেস করেন সরকারি সুযোগ সুবিধা পৌঁছায় কি না। আর এই প্রশ্নের উত্তরে একটি হতবাক করা তথ্য উঠে আসে। তথ্যটি হল বাবু বাগদির বাড়িতে এখনো অব্দি বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছায়নি। ২০২০ সাল শেষ হতে চললো, যখন মানুষ চাঁদে জমি কিনতে শুরু করেছে, তখন ওই পরিবারে জীবনযাপনের জন্য নূন্যতম সরকারি পরিষেবা বিদ্যুৎ পরিসেবাটুকু পৌঁছায়নি।”
পাশাপাশি অনুপম হাজরার অভিযোগ, “আজ মুখ্যমন্ত্রী যে গ্রামে গিয়েছিলেন সেই গ্রামটি খুব একটা অপরিচিত গ্রাম নয়। গ্রামটি হল শান্তিনিকেতন অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল সুপরিচিত ট্যুরিস্ট কেন্দ্রের পাশের গ্রাম। আর এই গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারগুলি এখনো অবধি বিদ্যুৎ পরিষেবাটুকু পায়নি! অর্থাৎ আজ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে ২০১১ সাল থেকে ক্ষমতায় আসার পর উন্নয়নের নামে তৃণমূলের নেতৃত্বে প্রহসন হয়েছে।”
এর পাশাপাশি অনুপম হাজরা এদিন জানান, “যেহেতু মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী এদিন নিজেই ওই হতদরিদ্র পরিবারটিকে চিহ্নিত করেছেন তাই আমরা যে করেই হোক ওই ব্যক্তির বাড়িতে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেবো। আমরা সরকারে থাকলে হয়তো এই কাজটা খুব সহজ হত। কারণ কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পগুলিকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হতদরিদ্র পরিবারগুলির কাছে পৌঁছে দেয় না। তবে আমাদের কর্তব্য ওই পরিবারে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া।”
পাশাপাশি ওই আদিবাসী গ্রামের মহিলারা মুখ্যমন্ত্রীকে এটাও অভিযোগ করেছেন, তাদের গ্রামে এখনো সকলের বাড়িতে ঠিকঠাক সরকারি প্রকল্পের বাথরুম পায়খানা পৌঁছায়নি। তাদের সকলকেই উন্মুক্ত জায়গাতেই প্রকৃতির ডাকে যেতে হয়।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো ঘোষণা না হলেও ইতিমধ্যেই বঙ্গ রাজনীতির পারদ চড়ছে শাসক এবং বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে। আর নতুন বছরে এই নির্বাচন আসার আগে এই পারদ আর চড়বে বৈ কমবে না বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।