নিজস্ব প্রতিবেদন : বাঙ্গালীদের বলা হয় ভ্রমণপিপাসু। আসলে বাঙালিদের মন কখনোই চার দেওয়ালের মধ্যে টিকে থাকে না। যে কারণেই যখনই ছুটিছাটা মিলে তখনই তারা বেরিয়ে পড়েন কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাওয়ার জন্য। আবার বাঙ্গালীদের ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে যে সকল জায়গা অত্যন্ত প্রিয় তার মধ্যে সুন্দরবন (Sundarbans) একটি।
ঘন জঙ্গলের মাঝে ম্যানগ্রোভ গাছের দেখা পেতে, রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ অন্যান্য জংলি প্রাণীদের একবার চোখে দেখতে অনেকেই বছরের বিভিন্ন সময় সুন্দরবনে ছুটে যান। নদীর পথ অথবা সমুদ্রপথে নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সেই আনন্দ বলে বুঝানো মুশকিল। তবে যে সকল পর্যটকদের কাছে সুন্দরবন অত্যন্ত প্রিয় এবং যারা এই জায়গা ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করে থাকেন তাদের জন্য এবার বন্ধ হয়ে গেল সুন্দরবন।
১ জুন অর্থাৎ শনিবার থেকে টানা তিন মাসের জন্য সুন্দরবনের দরজা পর্যটক সহ সাধারণ মানুষদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল। প্রশাসনের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার থেকেই সুন্দরবনের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তা আবার খোলা হবে আগামী ৩১ আগস্ট। সুতরাং যদি কেউ সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকেন তাহলে তাদের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফ থেকে।
জুন মাস থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত সুন্দরবনের নদনদী খাল বিলে মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। এছাড়াও এই মরশুমে সুন্দরবনের মাছ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য বনবিভাগের তরফ থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আগে এই ব্যান পিরিয়ড এক মাস কম ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে ব্যান পিরিয়ড বাড়িয়ে করা হয়েছে তিন মাস। বন বিভাগ সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষার জন্য ২০১৯ সাল থেকে এই নিয়ম জারি করে ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতো, ২০২২ সাল থেকে তা বাড়িয়ে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে।
তবে এই ব্যান পিরিয়ড থাকার কারণে পর্যটকরা না হয় ঘুরতে যেতে পারবেন না, কিন্তু সেই সকল মানুষদের কাছে এই সময়গুলো অত্যন্ত কষ্টকর। বিশেষ করে সেই সকল মানুষদের যারা সুন্দরবনের কাঁকড়া থেকে শুরু করে মাছ, মধু ইত্যাদি সংগ্রহ করে জীবনযাপন করে থাকেন। কেননা ব্যান পিরিয়ড চলাকালীন তারা কোনভাবেই সুন্দরবনের প্রবেশ করতে পারেন না এবং নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করতে চরম অসুবিধার মুখোমুখি হন।