Lost Railway Station: বর্তমানে ভারতীয় রেলব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম উন্নত এবং আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশের পরিবহন ব্যবস্থাকে নিমেষে টেক্কা দিচ্ছে ভারতীয় রেলব্যবস্থা। কয়েক বছর আগেও হাইস্পিড ট্রেনের কথা স্বপ্নেও কল্পনা করা যেত না, কিন্তু বর্তমানে বুলেট ট্রেনের আদলে তৈরি করা হয়েছে বন্দে ভারতে এক্সপ্রেস। ভবিষ্যতে বুলেট ট্রেনও ছুটবে ভারতের মাটিতে। তবে এখনো এমন বহু স্টেশন রয়েছে যা হারিয়ে গেছে স্মৃতির পাতায়। আজকের প্রতিবেদনে তেমনি একটি স্টেশনের কথা তুলে ধরা হবে।
ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা এই রেলস্টেশনটি (Lost Railway Station) এখনো রয়েছে কিন্তু পাল্টে গেছে তার চিত্র। আজকে যে রেলস্টেশনটি সম্পর্কে আমরা আলোচনা করে নেব তার একটি অংশ রয়েছে বাংলায় এবং অপর একটি অংশ রয়েছে ঝাড়খন্ডে। স্বাধীনতার আগে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ছোট্ট রেলস্টেশন পলাশস্থলী। বীরভূমের রুক্ষ লাল মাটির উপরে, শাল-শিমূল-সেগুন-মহুয়ায় ঘেরা ভগ্নপ্রায় একটি স্টেশনবাড়ি।
আরো পড়ুন: এখন আপনার সাথেই ট্রেনেই যাত্রা করতে পারবে আপনার বাইক, ট্রেনে বাইক পাঠানোর নিয়মগুলি কি কি
কতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত এই রেললাইন? বীরভূমের ভীমগড় থেকে এবং ঝাড়খন্ড পর্যন্ত বিস্তৃত রেললাইন। অর্থাৎ, রেললাইনের কিছু অংশ বীরভূম, কিছু অংশ রয়েছে ঝাড়খন্ডের মধ্যে। পলাশস্থলী স্টেশনটি বর্তমানে ঝাড়খন্ডের অন্তর্গত। স্থানীয়দের মত অনুসারে এই রেলস্টেশনের তলায় রয়েছে কয়লা খনি। সরকারের চোখের আড়ালে নিয়মিতভাবে চলে আসছে অবৈধ খনন। যার ফল ভোগ করতে হয়েছে এই রেলস্টেশনটিকে (Lost Railway Station)। অবৈধ উপায়ে খননের ফলে রেললাইন সংলগ্ন মাটি যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছরেরও বেশি সময়ে ধরে এই স্টেশনের ওপর দিয়ে কোনো ট্রেন চলাচল করে না।
আরো পড়ুন: নর্থ বেঙ্গলের একাধিক ট্রেনের সময়সূচির পরিবর্তন হচ্ছে, দেখে নিন একনজরে
এই রেলপথ প্রথম চালু হয়েছিল ১৯৫৩ সালে। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ২৭ কিলোমিটার। পূর্ব রেলের সাঁইথিয়া-অন্ডাল শাখার এই ভীমগড়-পলাশস্থলীর রেলপথ কোন এক সময় যথেষ্ট ব্যস্ত স্টেশন (Lost Railway Station) নামে পরিচিত ছিল। এমনকি দুই থেকে চারবার ট্রেন চলাচল হত। স্টেশনটির সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবন গভীরভাবে জড়িয়ে ছিল।
বর্ধমান, আসানসোল, কলকাতা যেতে গেলে এর থেকে সহজ উপায় আর ছিল না। কালের কবলে পড়ে স্টেশনটি তার জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে। এই রেললাইনের উপর দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন আর চলে না তবে মালগাড়ি এখনো চলে। বহুদিন ধরে এই স্টেশনটিকে পুনরায় চালু করার দাবি জানানো হয়েছিল। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এই শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হওয়ার পর এ সমস্তই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় মানুষের জন্য সহজ এবং কম সময়ে যাতায়াতের মাধ্যমটিও আজ বন্ধ।