North East Frontier Railway: বর্ষাতেও ঘোড়ার মত টগবগ করে ছুটবে ট্রেন! রেল নিচ্ছে দুর্দান্ত ব্যবস্থা

Prosun Kanti Das

Published on:

North East Frontier Railway is making efforts to upgrade their infrastructure: ভারতীয় রেল সর্বদাই চেষ্টা করেছে তার যাত্রীদের উন্নত মানের পরিষেবা দেওয়ার। বর্তমানে এটি ভারতের অন্যতম পরিবহন ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বে নিজের স্থান অধিকার করেছে নিজের দক্ষতায়। বছরের বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় রেল যাত্রীদের সুবিধার জন্য নানারকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। তবে বিশেষ করে বর্ষাকালে যাতে যাত্রীদের ভ্রমণে কোনোরকম সমস্যা সৃষ্টি না হয় তার জন্য সম্প্রতি নিয়েছে একটি বড় পদক্ষেপ। আজকের প্রতিবেদনে আমরা বিস্তারিতভাবে জেনে নেব এই সম্পর্কে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (North East Frontier Railway) যে প্রচেষ্টা করেছে এবং তাদের পরিকাঠামোর আপগ্রেডেশনের জন্য কয়েক বছর ধরে যাত্রীদের বর্ষার সময় কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। ট্রেন পরিচালনা করতে আগের থেকে অনেক বেশি সুবিধা হয়েছে। যদিও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে কিন্তু তা সত্ত্বেও ন্যূনতম বাধা ছাড়া রেলের প্রত্যেকটি ডিভিশনে মসৃণ ও স্বাভাবিকভাবে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের সাহায্য হয়েছে।

ভারতীয় রেল প্রবল বর্ষার মধ্যেই যাত্রীদের উন্নত পরিষেবা দেবার চেষ্টা করেছে। এছাড়া প্রত্যেক বছর প্রায় ৭০০০ এমএম বৃষ্টিপাত হওয়া সত্ত্বেও নিম্ন হিমালয়ান রেঞ্জের পাদদেশের কাছে এই ধরনের খারাপ ভূখণ্ডের মধ্যে যেসব অঞ্চল অবস্থিত তাদের পরিষেবা দিয়ে চলেছে রেল। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু প্রতি বছর প্রবেশ করে মে মাসের মাঝামাঝি সময়, তাই বর্ষাকাল স্থায়ী হয় মে মাসের মাঝামাঝি থেকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। আবার রেলের লামডিং ডিভিশনে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে বর্ষা শুরু হয়ে যায়। এই বর্ষায় প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত থেকে শুরু করে ভূমিতে ধস নামে কিংবা বাঁধ খণ্ড বিখণ্ড হওয়া ও ব্রিজের উপর দিয়ে জলের প্রবাহ বয়ে যাওয়া এইধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ ট্র্যাকের সুরক্ষিত ও ভালো অবস্থা নিশ্চিত করার জন্য একটি বিস্তারিত কৌশল গ্রহণ করেছে, এরফলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনরকম সমস্যা দেখা দেবে না।

যাতে রেলওয়ে ট্র্যাকে নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারে তারজন্য উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের (North East Frontier Railway) পক্ষ থেকে বিস্তারিত কৌশল নেওয়া হয়েছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্পর্শকাতর স্থানগুলিতে বর্ষাকালীন সময়ের পূর্বে নিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিষ্কার করা, ব্রিজের ওয়াটার ওয়ের পরিষ্কার করা, ব্রিজে বিপদস্তর চিহ্নিত করা ইত্যাদি। এইসব ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরও উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে যাতে বৃষ্টিপাতের জন্য কোনও বিপদজনক পরিস্থিতিতে না পড়ে সেকারণে ৬৪০০ কিমি-এরও বেশি ট্র্যাক ক্রমাগত পরিদর্শনের জন্য পেট্রোলিং টিম নিয়োজিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন 👉 Chenab Rail Bridge: আইফেল টাওয়ারের থেকেও উঁচু রেল সেতুতে ছুটল ট্রেন, ইতিহাস গড়ার পথে ভারতীয় রেল

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের (North East Frontier Railway) অধীনে আছে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বিভিন্ন অংশ। সিভিল, মেকানিক্যাল, সিগনালিং, ইলেক্ট্রিক্যাল সম্পদ ও সরঞ্জাম ইত্যাদির উপযুক্ত সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি মিশন মোডে বর্ষাকালের জন্য বহু প্রস্তুতিমূলক কাজ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পেট্রোলিং টিমটি আবহাওয়া দফতর থেকে করা বৃষ্টিপাতের সতর্কতার উপর ভিত্তি করে টহলদারি করে। টহলদারির জন্য যারা নিয়োজিত তারা জিপিএস ট্র্যাকার, লুমিনাস জ্যাকেট, রেনকোট ও পৃথক ওয়াটারপ্রুফ ট্রাউজার, সুরক্ষামূলক হেলমেট, সুরক্ষামূলক জুতো, শক্তিশালী সার্চ ফ্ল্যাসলাইট ইত্যাদি অত্যাধুনি সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে সর্বদা প্রস্তুত। ট্রেনের স্বাভাবিক চলাচল যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয় তার জন্য এই টহলদারি টিম সর্বদা প্রস্তুত। যদি কখনো কোনও পরিস্থিতি সম্পর্কে নিকটতম স্টেশনে খবর দেওয়া যায় তার জন্য প্রত্যেকটি টহলদারি দলের কাছে রয়েছে মোবাইল ফোনের ব্যবস্থা।

শুধু যে টহল দেওয়া হয় তা নয় এর পাশাপাশি ভূমিধসপ্রবণ অঞ্চল, বিপদসীমার উপর দিয়ে জল প্রবাহিত হওয়া ব্রিজ ইত্যাদিতে ওয়াচম্যানও নিযুক্ত করা হয়েছে। অনেক সময় সতর্কতা সত্ত্বেও বিভিন্ন সময়ে ব্রিজ ভেসে যায়, বাঁধ ভেঙে যায় ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য সেই মুহূর্তে প্রয়োজন হয় বোল্ডার, বালু, বালুর বস্তা, ব্রিজ ইত্যাদির বিভিন্ন প্রি-ফেব্রিকেটেড উপাদান। পাশাপাশি, প্রায় ৩০৯৯০৯ কিউবিক মিটার বোল্ডার, ১৭৪২৬ কিউবিক মিটার কোয়ারি ডাস্ট, ২২০০০ কিউবিক মিটার সিল্ট, ৪৫০০০ টি বালু ভর্তি ব্যাগ এবং ২৮৯৮০০টি ও খালি সিমেন্টের ব্যাগ বর্ষাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য মজুত রাখা হয়। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রাকৃতিক সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য এবং যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য ক্রমাগতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যারফলে বাধাহীন ভ্রমণ করতে পারবে ভারতীয় রেলের যাত্রীরা।