নিজস্ব প্রতিবেদন : হুগলির সিঙ্গুরে (Singur) টাটা মোটরস (Tata Motors) তাদের টাটা ন্যানো (Tata Nano) গাড়ির কারখানা তৈরি করতে পারেনি। রতন টাটার (Ratan Tata) স্বপ্নের গাড়ির কারখানা রাজনৈতিক টানাপোড়েন, আন্দোলন, বিক্ষোভের কারণে ২০০৮ সালে সরে গিয়েছিল গুজরাটের সানন্দে। কারখানা সরে গেলেও এই সিঙ্গুরে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ছিল টাটাদের। সেই বিনিয়োগের ক্ষতিপূরণ হিসাবে সোমবার আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল নির্দেশ দেয় রাজ্য সরকারকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা টাটাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে।
বিপুল অংকের এই টাকার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার খবর মার্কেটে ছড়িয়ে পড়তেই পোয়াবারো হয়ে যায় টাটাদের। পারতে থাকে শেয়ার দর, অন্যান্য দিক দিয়েও লক্ষ্মীর লাভ হতে শুরু করে টাটা গোষ্ঠীর। এর পাশাপাশি এই বিপুল অংকের টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় কাটাছেঁড়া। বিরোধীদের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই টাকা যেন রাজ্য সরকার নিজেদের দলীয় ফান্ড থেকে দেয়, মানুষের দেওয়া ট্যাক্স থেকে যেন না দেয়।
আবার শাসক দল তৃণমূলের নেতা নেত্রী থেকে শুরু করে অনেকেই দাবি করছেন, টাটারা সেই সময় রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার মূলে তারা নন বরং দায়ী তৎকালীন বাম সরকার। যে কারণে বামেদেরই এই ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে এখন রাজ্য জুড়ে তোলপাড় পরিস্থিতি। তবে এমন মুহূর্তেই জানা যাচ্ছে, শুধু ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা দিয়েই কিন্তু মুক্তি পাবে না রাজ্য সরকার। টাকার অংক হতে পারে দ্বিগুণেরও বেশি। কেননা সেই অংক বড় জটিল।
কেন দ্বিগুণের বেশি টাকা দিতে হতে পারে রাজ্য সরকারকে? এর জন্য প্রথমেই জানতে হবে আরবিট্রাল ট্রাইবুনাল ঠিক কি নির্দেশ দিয়েছে! ট্রাইবুনালের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, শিল্প করতে না পারার জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে রাজ্য সরকারকে ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে। হ্যাঁ, আর এর সঙ্গে দিতে হবে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ শতাংশ সুদ। এখানেই শেষ নয়, এর পাশাপাশি মামলার খরচ বাবদ দিতে হবে এক কোটি টাকা।
এখন যদি সব হিসেব-নিকেশ করা যায় তাহলে সুদের পরিমাণই যা দাঁড়াবে তাতে টাকার অংক ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকার দ্বিগুণ হয়ে যাবে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, সমস্ত হিসেব-নিকেশ অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে টাকা দেন প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি দিতে হলেও হতে পারে। যদিও রাজ্য সরকার এই রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই আদালতে গিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফৎ।