নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতের সাথে চিনের সীমান্ত বিবাদ নতুন কিছু নয়। তবে এই বিবাদ থাকলেও রক্তক্ষয়ী সংঘাত খুব কম নজরে এসেছে। যেটুকু হয়েছে তাহলো একে অপরকে নিজেদের ক্ষমতার জাহির দেখানো। দীর্ঘ ৫৮ বছর আগে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়, এরপর আবার ২০২০ সালের ১৫ই জুন রাতে। আর এই সদ্য সংঘাতে ভারতের শহীদ হন ২০ জন সেনা, চীনেরও গোটা ৪৩-এক সেনার প্রাণ গিয়েছে বলে খবর। আর এবারের বিবাদের মূলে রয়েছে চীন, এমনটাই দাবি করেছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। সমস্যা তৈরি করে তারা এমন ভাব দেখাচ্ছে যেন মনে হচ্ছে গালওয়ান উপত্যকা তাদেরই। আর চীনের এই মনোবৃত্তি দেখে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয় চরম নিন্দা করেছেন।
আর এই সীমান্ত এলাকা নিয়ে চীনের বিবাদ কি কেবলমাত্র ভারতের সাথে! এমনটা ভাবলে ভুল হবে। ভারত ছাড়াও চীন তাদের আশপাশের একাধিক দেশের সাথে একাধিক সীমান্ত জায়গায় সমস্যা জিইয়ে রেখেছে। আর ইতিহাস বলছে চীনের এই স্বভাব দীর্ঘদিনের। চীন সবসময়ই আগ্রাসন নীতি নিয়ে চলতে পছন্দ করে। বিশ্বে নিজেদের কায়েম বজায় রাখার প্রচেষ্টায় থাকে। আর এসব কথায় তুলে ধরেছেন লাদাখের বিখ্যাত গবেষক সোনম ওয়াংচুক তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে। এখন প্রশ্ন হল ভারত ছাড়াও চীন কোন কোন দেশের সাথে সীমান্ত সমস্যা জিইয়ে রেখেছে।
ভুটান : কিছুদিন আগেই ২০১৬ সালে চীন ভারত ভুটান তিব্বত সীমান্ত এলাকায় থাকা ডোকলামে সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। শুধু চেষ্টা নয় সমস্যা তৈরি করেছিল। চীন সেখানে জায়গা দখল করে নিজেদের নির্মাণকাজ করতে চায়। তবে এত সহজে চীনের সেই দাবি পূরণ হয়নি। পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় ভারত। কড়া জবাব দেওয়া হয় চীনকে। যে কারণে ওই এলাকায় টানা ৭৩ দিন মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল ভারত ও চীন সেনারা। টানা ৭৩ দিন ভারতের সাথে চীনের অচলাবস্থা চলে।
নেপাল : বর্তমানে নেপাল ভারতের তিনটি এলাকাকে তাদের মানচিত্রে জায়গা দিয়েছে। তাদের দাবি এই তিনটি এলাকা নেপালের অংশ। আর হঠাৎ করে নেপালের এমন দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের মতামত এর পিছনে অন্য কারোর ষড়যন্ত্র রয়েছে। তবে এই নেপালেরই সার্ভে সংস্থার দাবি করেছে, পূর্ব নেপালের হুলা, রাসুয়া সহ চার চারটি জায়গা দখল করে বসে আছে চীন।
দক্ষিণ চীন সাগর : এই এলাকাটি বিশ্বের সবথেকে ব্যস্ততম সমুদ্র পথ। আর তা বুঝে চীন এই এলাকায় নিজেদের অধিকার কায়েম করতে ব্যস্ত। বেশ কিছুদিন ধরেই এই এলাকায় তারা তাদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ এই সমুদ্রপথের সাথে যুক্ত রয়েছে বিশাল ব্যবসায়িক সম্পর্ক। জানা গিয়েছে এই সমুদ্রপথে বছরে ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়ে থাকে।
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সাথে চীনের সমস্যা : তাইওয়ান, ব্রুনেই, মায়য়েশিয়া, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম সহ বিভিন্ন দেশের সাথে চীনের সাথে সমস্যা। দক্ষিণ চীন সাগরের বিভিন্ন দ্বীপের সাথে চীনের সমস্যা রয়েছে এলাকা দখল নিয়ে। এমনকি চীন দাবি করে গোটা তাইওয়ানই নাকি তাদের। আর এই নিয়েই বছরের-পর-বছর সমস্যা জিইয়ে রয়েছে এই সকল এলাকায়।
পূর্ব চীন সাগর : দক্ষিণ কোরিয়া, উত্তর কোরিয়া, জাপানের মত এই এলাকায় থাকা দেশগুলির সাথে চীনের বিবাদ বা সমস্যা অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। জাপানের সেনকাকু, দিয়াওউ দ্বীপ ইত্যাদি জায়গায় চীন তাদের বলে দাবি করে।