সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ জীবধরপুরের মিকি মেটাল কারখানায়

হিমাদ্রি মন্ডল : দীর্ঘদিন ধরে জীবধরপুরের মিকি মেটাল রড কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিল। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার সেই কারখানা (মিনিস্টিল) মিকি মেটালস লিমিটেডের পক্ষ থেকে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ লাগানো হলো। গত শুক্রবার এই নোটিশ লাগানো হয়েছে। আর মালিকপক্ষের এই সিদ্ধান্তে কর্মহীন হয়ে পড়লেন ওই কারখানার ২৮০ জন শ্রমিক।

শ্রমিকদের দাবি, এই কারখানায় তারা দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের বিনিময়ে ২২৪, ২৩৪ এবং ২৪৪ টাকা এই তিন হারে বেতন পেতেন। এই কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বিপুল হলেও শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবি মানেননি মালিকপক্ষ। যে কারণে তারা নিজেদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কয়েকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এরপর বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল মাসে ২০০০ টাকা বকেয়া দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন। যদিও মালিকপক্ষ ১৫০০ টাকা দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু সেই টাকাও দেওয়া হয়নি। এরপর হঠাৎ করে এমন সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক নোটিশ ঝুলিয়ে দেওয়া হলো।

শ্রমিকদের পক্ষ থেকে এটাও জানানো হয় যে মজুরি বৃদ্ধির পরিপেক্ষিতে তিন বছর অন্তর অন্তর তাদের একটি চুক্তি হয়। কিন্তু চলতি বছর সেই চুক্তি এখনো হয়নি। আর এই চুক্তি না হওয়ার দরুন শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মায় এবং তারা কাজে আসেন নি। জানানো হয় সমস্ত বকেয়া মেটানোর পরেই কাজে যোগ দেবেন তারা। দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি রয়েছে শ্রমিকদের। আর সমস্ত বকেয়া মিটে যাওয়ার পরেই আমরা কাজে যোগ দেবে তারা। এছাড়াও গত একমাস ধরে মালিকপক্ষ উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন।

যদিও ওই কারখানার মালিক নিখিল আগারওয়াল জানিয়েছেন, “বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ১৫০০ টাকা ধার্য করে দিয়েছিলেন শ্রমিকদের জন্য বাড়তি বেতন হিসেবে। কিন্তু সেটাও তারা মানতে রাজি নন। এরপর তারা কাজে যোগ দেননি। এর ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। যে কারণে আমরা কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা শ্রমিকদের ছাঁটাই করে আর কারখানা চালাবো না। শ্রমিকদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে মেশিনপত্র তুলে নিয়ে চলে যাবো।”

আর এইভাবে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূম জেলা পরিষদের পরামর্শদাতা অভিজিৎ সিংহ জানিয়েছেন, আমরা কোনভাবেই কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পক্ষে নই। আইএনটিটিইউসি সভাপতি নূরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সব পক্ষকে নিয়ে বসে এর একটা বিহিত বের করতে।