লাল্টু : মুহূর্তে কখন কি ভাইরাল হতে পারে তা হয়তো জানেন না স্রষ্টা। ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছে এক বাদাম বিক্রেতার ক্ষেত্রে। যে বাদাম বিক্রেতা এখন সোশ্যাল নাগরিকদের কাছে ‘বাদাম কাকু’ নামেই পরিচিত। তার নিজের বানানো ‘বাদাম বাদাম, দাদা কাঁচা বাদাম’ গান এবং তার বাদাম বিক্রি করার সময় ক্যামেরাবন্দী হওয়া ভিডিও এখন সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
তিনি কি কখনো ভেবেছিলেন তার এই গান এইভাবে ভাইরাল হবে সোশ্যাল মিডিয়ায়? হয়তো না। কারণ এখন মানুষের হাতে হাতে যখন স্মার্টফোন পৌঁছে গিয়েছে তখন কেউই আগাম জানতে পারেন নাকি ভাইরাল হবে। তবে এই ‘বাদাম কাকু’ যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলে দিয়েছেন তাতে তা এখন বাংলার দার্জিলিং থেকে সাগর পর্যন্ত তোলপাড় করে দিয়েছে।
এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সবার মধ্যে একটি প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে এই ‘বাদাম কাকু’র নাম ও ঠিকানা কি? এই ‘বাদাম কাকু’ অন্য কোন জায়গার নন, তিনি হলেন দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মী নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের এই মানুষটি হলেন ভুবন বাদ্যকর।
তার কাছ থেকে জানা গিয়েছে, তিনি যখন প্রথম বাদাম বিক্রি করা শুরু করেন তখন সেই ভাবে তার বাদাম বিক্রি হতো না। এরপর তার মধ্যে চিন্তাভাবনা শুরু হয় কীভাবে তিনি তার ব্যবসার শ্রী বৃদ্ধি করে স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তানকে লালন পালন করবেন। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া এই মানুষটি ভাঙাচোরা ঘরের বাড়িতে বসেই পরিকল্পনা করেন ভাঙাচোরা জিনিসপত্র, মাথার চুল ইত্যাদির পরিবর্তে কাঁচা বাদাম গ্রাহকদের হাতে তুলে দেবেন।
ব্যবসার পরিকল্পনা করার পাশাপাশি তার ব্যবসাকে আরও আকর্ষণীয় এবং বহু মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পাড়ায় পাড়ায় মোটরবাইকে কাঁচা বাদাম নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় গুনগুন করতে করতেই তৈরি হয়ে যায় তার এই গান। আর সেই গানই এখন মানুষের ঠোঁটে ঠোঁটে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
ভুবন বাদ্যকরের ভাইরাল হওয়া এই গান প্রসঙ্গে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “চারদিকে এখন আমার এই গান ঘুরে বেড়াচ্ছে আমি শুনছি। কিন্তু আমি কোনোদিন ভাবি নি এই গানটি ভাইরাল হবে। আমি তো নিজের ব্যবসার জন্য এই গান তৈরি করেছিলাম। এই গান আমার সম্পূর্ণ নিজস্ব।”