ছাতা ব্যবহার করে বজায় রাখুন সামাজিক দূরত্ব, করোনা ঠেকাতে নয়া নিদান

নিজস্ব প্রতিবেদন : করোনা ভাইরাস রীতিমতো ভীতির সৃষ্টি করেছে বিশ্বজুড়ে। এখনও অবধি এই ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন হাতে আসেনি। অথচ এই ভাইরাসে গোটা বিশ্বজুড়েই লক্ষাধিকেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউনকে কার্যকর করা হয়েছে। ভারতে ৩রা মে’র লকডাউন বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৭ই মে পর্যন্ত।

কিন্তু এতেও কি করোনাকে রোখা যাবে?

একদিন না একদিন মানুষের প্রয়োজনে বাজার করতে মানুষকে তো বাড়ির বাইরে বের হতেই হবে। কতদিনই বা মানুষ ঘরে বসে থাকবে? আর ঘরে বসে থাকলেও বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস শেষ হলে তাকে তো বাড়ির বাইরে বের হতেই হবে। তখন সে কী করবে? এই ক্ষেত্রে ওড়িশা রাজ্য এক নতুন পন্থা আবিষ্কার করেছেন। এই পন্থা মেনে চললে রাস্তায় বের হওয়াও যাবে আর একজনের সাথে অপরজনের সামাজিক দূরত্বও বজায় থাকবে। আমরা সবাই জানি যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আমাদের সামাজিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। রাস্তাঘাটে বেরোলে এই দূরত্ব বজায় রাখতেই হবে। কিন্তু বাজার করার সময় প্রত্যেকটা মানুষের সাথে কি এইভাবে আবশ্যিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব? কখনো না, কখনো একটা মানুষের সাথে আর একটা মানুষ ধাক্কা লাগবেই, কখনো না কখনো একটা মানুষের সংস্পর্শে তো আর একটা মানুষ চলে আসবেই। কারণ মানুষতো সবসময় সচেতন মানসিকতা নিয়ে রাস্তায় ঘোরে না। কখনো কখনো চেনা পরিচিত খুব কাছের কোন মানুষের সাথে রাস্তাঘাট করে দেখা হয়ে গেলে, আমরা ভুলে যায় সামাজিক যাবতীয় বিধিনিষেধ! আমরা ভুলে যায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা! তাহলে সেক্ষেত্রে কী করণীয়?

এই কারণেই ওড়িশা সরকার প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে ছাতা ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন। ওড়িশার গঞ্জাম জেলার কালেক্টর বিজয় অমৃত কুলাঙ্গি সকলকে ছাতা ব্যবহারের পরামর্শ দিলেন। তার মতে এইভাবে ছাতা ব্যবহার করলে রাস্তায় একে অপরের সাথে স্বাভাবিকভাবেই দূরত্ব বজায় থাকবে। তিনি এই নিয়ে একটি কার্টুনের ছবি টুইটারে শেয়ার করেন‌। এই ছবিটিতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে একটি ছাতা থাকায় দুটি মানুষের মধ্যে দেড় মিটার দূরত্ব বজায় থাকছে। এর ফলে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণও রোখা যাবে।

এর আগে বহু পুরোনো একটি সাক্ষাৎকারে ঐ অফিসার বলেন, “আমি বিশ্বাস করি একটি ছাতা ব্যবহার করার ফলে একজনের সাথে অপরজনের পারস্পরিকভাবে দূরত্ব তৈরি হবে। যিনি ছাতা ব্যবহার করছেন তার সঙ্গে অন্য ব্যক্তির দূরত্ব দেড় মিটার হবেই। আর এছাড়া ছাতা ব্যবহারের ফলে সূর্যের প্রখর তাপও এড়ানো যাবে।”

কেরালাতে প্রথমেই ছাতা ব্যবহারের পন্থা অবলম্বন করা হয় এবং এই পন্থা অবলম্বন করার ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকে এবং সংক্রমণও অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কেরলের এই পন্থায় সাফল্য লাভ আসে। আজ কেরল মডেল মডেলকেই অনুকরণ করছে ওড়িশা। কেরল মডেলকে শুধু ওড়িশা নয়, ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি মানুষেরই অনুসরণ করা উচিত। কারণ ১৩০ কোটির এই দেশ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আনবার জন্য বাড়ির বাইরে বেরোবে আর তখন এই দীর্ঘায়িত লকডাউন এক মুহূর্তে বিফল হয়ে যাবে যদি আমরা সামাজিক দূরত্বকেই না মানি। তাই দয়া করে বাইরে বেরোলে ছাতা ব্যবহার করুন। এর ফলে দূরত্ব বজায় থাকবে সামাজিকভাবে। করোনা সংক্রমণের চেনটিকেও ভেঙে ফেলা যাবে অনায়াসে।