One Rupee Thali: বর্তমান দ্রব্যমূল্যের দুনিয়াতে অল্প দামে খাবার পাওয়া একেবারে আশ্চর্যের বিষয়। কিন্তু এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলছে বারাসাতের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন । মাত্র এক টাকা খরচ করলেই মাছ- ভাত ডিম- ভাত এমনকি নিরামিষ খাবারও পাওয়া যাবে এখানে। যেদিন যেই মেনু রান্না হবে তার বিনিময়ে দিতে হবে মাত্র ১ টাকা। বহু বছর ধরে মানুষকে পরিষেবা দিয়ে আসছে এই সংগঠনটি। বারাসত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বাইরে যশোর রোডের ধারেই এই পরিষেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষজন থেকে হাসপাতালে আসার রোগীর পরিজনেরাও।
ভ্রাম্যমান এই ক্যান্টিন বন্ধ থাকে রবিবার। তবে সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে একটাকার বিনিময় পেয়ে যাবেন ভরপেট খাবার। বারাসাত হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা মানুষদের উদ্দেশ্যে এমনই এক দুর্দান্ত ব্যবস্থা নিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। দুপুর ১২ টা থেকে ২টো পর্যন্ত ১টাকায় (One Rupee Thali) দুপুরে পেটভরে খাবার খেতে পারবে সাধারন মানুষ। ভ্রাম্যমান এই ক্যান্টিনটি শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই খাবার যেন প্রায় শেষের পথে। বর্তমানে যে পরিমাণ খাবার সংগঠন নিয়ে আসে তাতে ২০০ থেকে ২৫০ জন খেতে পারেন।
যদি ভাগ্যক্রমে কোন স্পনসর পাওয়া যায় তাহলে মেনু চেঞ্জ হয়ে যায়। যেমন ধরুন, সাধারণ ডাল ভাতের পরিবর্তে সেদিন মেনুতে থাকে ফ্রাইড রাইস, চিলি-চিকেন থেকে শুরু করে বিরিয়ানিও। তবে খাবারের মূল্য পরিবর্তন হয় না, খাবার খেতে পারবেন মাত্র এক টাকাতেই (One Rupee Thali)। এই অভিনব উদ্যোগ নেওয়ার পিছনে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আসল কারণটি কি? সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হল তাদের আসল উদ্দেশ্য। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ এখানে চিকিৎসার জন্য আসে তারা যাতে দুপুরবেলা ভরপেট খেতে পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া। এই পরিকল্পনাটিকে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে হয়। চিকিৎসা করাতে এসে যেন কোন মানুষ অভুক্ত না থাকে। অনেকেই হয়তো ভাবতে পারেন এক টাকা যে খাবারের মূল্য তার মান হয়তো ভালো নয়। তবে খাবারের মান খুবই ভালো।ভাত লাগলেও অতিরিক্ত ভাত দেওয়া হয়। এর জন্য কোন রকম অতিরিক্ত পয়সা দিতে হয় না।
সম্প্রতি এক টাকার কয়েনের (One Rupee Thali) গুরুত্ব আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে চলেছে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে এক টাকা দিয়ে খাবার পাওয়া যাওয়া একেবারে আশ্চর্য ব্যাপার। বিশ্বাস না হলে একবার ঘুরেই আসতে পারেন বারাসাত হাসপাতাল চত্বরে। সংগঠনের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, এমন বহু মানুষ আছেন যারা একটা টাকাও দিতে পারেন না তাদেরকেও কখনো অভুক্ত রাখা হয় না। কিন্তু অনেকে টাকা না দিলে খেতে চান না, মনে করেন দান করা হচ্ছে। দেখতে দেখতে এই পরিষেবা বহু বছর ধরে চলছে।
এই পরিষেবা দিয়ে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি সত্যিই খুব খুশি। বহু গরীব মানুষ পেট ভরে খেতে পারেন এই ব্যবস্থার কারণেই। পাশাপাশি চিকিৎসা করতে এসে কোন মানুষকে অভুক্ত থাকতে হয় না। মানুষের চোখে যে তৃপ্তি দেখা যায় সেটাই তাদের আসল পাওনা। ইচ্ছে থাকলে মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায় এটাই হলো তার সব থেকে বড় প্রমাণ। বারাসাত হাসপাতালের সামনে এক টাকার ভ্রাম্যমান এই ক্যান্টিন তাই এখন রীতিমত হিট।