Jaldapara Elephant School: ‘এলিফ্যান্ট স্কুল’ বা হাতির পাঠশালা নামে পরিচিত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের হলং সেন্ট্রাল পিলখানা। পর্যটকদের কাছে এটি অত্যন্ত প্রিয় জায়গা। হস্তিশাবকদের এখানে দিনের পর দিন প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। যেমন ‘বীর’কে করোনার সময় তোর্সার জল থেকে উদ্ধার করেছিল বন দপ্তরের কর্মীরা। পাঠশালায় গুরুমশাইয়ের কাছে সহবত শিখে সেই বীর এখন কুনকি হওয়ার পথে।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের (Jaldapara Elephant School) কোদালবস্তি রেঞ্জের বনকর্মীরা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তোর্সা নদী থেকে উদ্ধার করেছিল একটা পুচকে অসহায় হাতিকে। বাইরে তখন কঠিন পরিস্থিতি চলছে আবার সাথে ছিল বর্ষাও। হস্তিশাবককে খরস্রোতা তোর্সার মুখে ঝাঁপ দিয়ে উদ্ধার করেছিল বনকর্মীরা। উদ্ধার করার সময় একেবারে ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল হস্তিশাবকটি। জলে থেকে ততক্ষণে সে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিল।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণ চিকিৎসক উৎপল শর্মার নেতৃত্বে যত্ন নেওয়া হয় ওই শাবকটিকে। একটি টিম ওই শাবকের জীবন বাঁচিয়ে তাকে নিয়ে যায় হলংয়ের স্কুলে (Jaldapara Elephant School)। বীর কিন্তু তখনও দুর্বল ছিল। গুঁড়ো দুধের তরল মিশ্রণও গিলতে পারত না। এমনকি মুখের ভিতর ফানেল ঢুকিয়ে খাওয়ানো হতো।
আরো পড়ুন: পদ্মার ইলিশ নাকি গঙ্গার, আসল ইলিশ চেনার অব্যর্থ কৌশল, ঠকার দিন শেষ
একেবারে কোলের ছেলের মতোই তাকে মানুষ করা হয়। বনকর্মী ছেরণ সুব্বা তাকে সন্তানের মতোই দেখভাল করত। বীরের সাথে রাতেও থাকতে হতো ছেরণকে। ছেরণকে না দেখলেই কেমন করত বীর। পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলে বীরও ধাতস্থ হয়। এরপর হাতির স্কুলে (Jaldapara Elephant School) সহবত শেখানো শুরু হয়। এই সঙ্গে হাঁটা, ছোটা সব শেখানো হয়। বীর অবশ্য এখন বড় হয়েছে। আদর্শ কুনকি হওয়ার সব শিক্ষা সে পেয়েছে। বনকর্মী আর মাহুতরা তার নাম দিয়েছিল বীর। মাহুত রোহিত ইসলাম একবার যদি বীর বলে হাঁক দেয়, শুঁড় তুলে ছুট শুরু।
জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, বীরকে বড় করাটাই ছিল ওদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে বীরের মধ্যে আদর্শ কুনকি হাতি হয়ে ওঠার সব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। জলদাপাড়ায় ৫টি হস্তিশাবক রয়েছে। কলাবতী, রেয়ানদের সঙ্গে আদরে প্রশ্রয়ে বীরও বেড়ে উঠছে সেখানে।