Paramita of Bengal ranked in UPSC despite failing 5 times: পড়াশোনা শেষ করে কম-বেশি সকলেরই চাকরি করার ইচ্ছা থাকে। তার জন্য অনেকেই চাকরির প্রস্তুতি নেন। কিন্তু সকলেই সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারে না। ব্যর্থ হওয়ার ফলে অনেকেই আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু বঙ্গকন্যা পারমিতা তা করেনি। ৫ বার ইউপিএসসি পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েও জেদ ছাড়েন নি। শেষ পর্যন্ত ৬ বারের মাথায় অদম্য জেদের বসে ইউপিএসসি পরীক্ষায় র্যাঙ্ক (Ranked in UPSC) করলেন বঙ্গকন্যা পারমিতা। পারমিতার গর্বে গর্বিত বাংলা। বর্তমানে সকল চাকরিপ্রার্থীদের অনুপ্রেরণা তিনি।
খুব ধনী পরিবারের মেয়ে নয় পারমিতা মালাকার। উত্তর ২৪ পরগনার খড়দার সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে পারমিতা। যিনি পদার্থবিদ্যায় গ্রাজুয়েশন পাশ করে পড়াশোনা শেষ করেন। তারপরেই কাজের জন্য যোগ দেন আইটি কোম্পানিতে। টানা সাত বছর কাজ করেন এই নামজাদা কোম্পানিতে। কিন্তু তখনও তার IAS অফিসার হওয়ার ইচ্ছা খুব একটা জাগেনি। যা পারমিতা নিজেই জানিয়েছেন। তবে ৭ বছর পর যখন তিনি SBI ব্যাঙ্কে কর্মরত হন ঠিক তার কিছু সময় আগে থেকেই ইউপিএসসি ক্র্যাক করার ইচ্ছা জাগে। আর তখন থেকেই শুরু হয় পারমিতার ইচ্ছা পূরণের লড়াই।
২০১৯ সাল থেকে UPSC ক্র্যাক করার পরীক্ষা দিতে শুরু করে বাংলার মেয়ে পারমিতা। টানা ৪ বছর ইউপিএসসি ক্র্যাক করার চেষ্টা করেন বঙ্গকন্যা। কিন্তু বারংবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। তবে হতাশ হয়েও চেষ্টা ছাড়েন নি তিনি। ৫ বারের মাথায় তিনি আবারও পরীক্ষা দেন। মাত্র ৪ নম্বরের জন্য ইউপিএসসি র্যাঙ্ক তালিকায় জায়গা করতে পারেননি। তারপরেই জোরালো জেদ তৈরি হয় পারমিতার মধ্যে। ৬ বারের মাথায় অর্থাৎ ২০২৩ সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় বসেন পারমিতা। আর সেখানেই তার ইচ্ছা পূরণের এক ধাপ এগিয়ে যায়। ২০২৩-এর ইউপিএসসি পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর সিভিল সার্ভিস স্টাডি সেন্টার থেকে উত্তীর্ণ হন মোট ৭ জন চাকরিপ্রার্থী। তার মধ্যে ৮১২ র্যাঙ্ক (Ranked in UPSC) করে ইউপিএসসি সাফল্য পান বঙ্গকন্যা পারমিতা মালাকার। উল্লেখ্য বিষয় এই ৪ বছরের মধ্যে তিনি ব্যাঙ্কের কাজ ছেড়ে মহকুমা তথ্য এবং সংস্কৃতি আধিকারিক হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে কাজের সূত্রে কল্যাণীতে পোস্টে রয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন: ২৩ বছরে প্রথম প্রচেষ্টাতেই UPSC ক্র্যাক! চিনে নিন অল্প বয়সী বঙ্গ তনয়া তমালিকে
তবে পরবর্তীকালে পারমিতা তার এই লড়াই সম্পর্কে জানিয়েছেন, তার এই ছয় বছরের যুদ্ধে তিনি বহুবার মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছিলেন, হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু কখনোই তিনি তার চেষ্টা এবং লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাননি। পরীক্ষায় না বসার কোনো অজুহাত তিনি খোঁজেন নি। যা তার সফলতার অন্যতম কারণ। তিনি বারবার নিজেকে এটা বুঝিয়েছেন যে, রাজ্য বা সিজিএলৈর মতৌ বহু পরীক্ষায় যখন তিনি সফল হয়েছেন তখন তিনি ইউপিএসসি পরীক্ষাতেও সফল হবেন, র্যাঙ্ক করবেন। নিজের লড়াইয়ের গল্প বলার পাশাপাশি ইউপিএসসি চাকরি প্রার্থীদের জন্য বেশ কিছু টিপসও দিয়েছেন পারমিতা। তার কথায় UPSC পরীক্ষায় সাফল্য পেতে গেলে সৎ হতে হবে। পড়াশোনার প্রতি অজুহাত দেখালে চলবে না। বারংবার মকটেস্ট দিতে হবে। সংসার, চাকরির সাথে যুক্ত থাকলেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে চলবে না। আর এই ইউপিএসসি র্যাঙ্ক করার জন্য দিল্লি নয়, নিজের রাজ্যের এলাকায় বসেই প্রস্তুতি নেওয়া যাবে।
ইউপিএসসি র্যাঙ্ক (Ranked in UPSC) করেই যে পারমিতার সিভিল সার্ভিসের লড়াই শেষ হয়ে গিয়েছে তা নয়। পারমিতার এক এবং একমাত্র লক্ষ্য আরো ভালো র্যাঙ্ক করে IAS অফিসার হওয়ার। তার অনুমান, র্যাঙ্ক অনুযায়ী তিনি হয়তো IRS হতে পারেন। তবে তিনি যে কাজেই নিযুক্ত হবেন সেই কাজ অত্যন্ত যত্ন এবং ভালোবাসার সাথে করবেন বলে জানিয়েছেন বঙ্গকন্যা পারমিতা মালাকার।