Backward Country: ২০২৪ নয়, এই দেশের মানুষেরা এখনো পড়ে রয়েছেন ২০১৬ সালে! পিছনে রয়েছে যে কারণ

Prosun Kanti Das

Published on:

The people of this backward country are still falling in 2016: আমরা সিনেমায় টাইম ট্রাভেলের বিষয়টি বহুবার দেখেছি। বিষয়টি আকর্ষণীয় হলেও আমাদের কাছে তা ১ প্রকার অবাস্তব। ১ টি মেশিনে করে হঠাৎ করে অতীতে ফিরে যাওয়া যায় অথবা চলে যাওয়া যায় ভবিষ্যতে। এটা মেনে নিতে একটু অসুবিধা হয় আমাদের। কিন্তু বাস্তবে এমন ১ টি ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। বাস্তবে রয়েছে এমন একটি দেশ যেখানে গেলে মনে হবে টাইম ট্রাভেলে করে পিছিয়ে গেছেন ৭ বছর। হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। দেশটির নাম ইথিওপিয়া। সারা বিশ্বের তুলনায় সাত বছর পিছিয়ে রয়েছে এই দেশটির (Backward Country) সময়। ফলে পিছিয়ে রয়েছে স্থানীয়দের জীবনযাত্রাও। এই দেশে গেলে, এখানকার জীবনযাত্রা দেখলে আপনি অবাক হতে বাধ্য।

ইথিওপিয়ার মানুষ এখনো পর্যন্ত প্রাচীন ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে। এই ক্যালেন্ডারে মাসের সংখ্যা রয়েছে ১৩ টি। শেষ মাসটির নাম পাইগুম। দিন সংখ্যা কিন্তু খুবই সামান্য, মাত্র ৫ থেকে ৬ দিন। বিশেষজ্ঞদের মতে দিন গণনা করার সময় অতিরিক্ত ৫-৬ টি দিনকে ক্যালেন্ডারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল তৎকালীন বিজ্ঞানীরা। আর এই ৫-৬ দিনের ব্যবধানের কারণে গোটা পৃথিবীর বর্তমান সময় সীমার চেয়ে প্রায় ৭ বছর ৩ মাস পিছিয়ে গেছে ইথিওপিয়ার (Backward Country) সময়। এই দেশের মানুষ প্রাচীন ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২০০৭ সালের ১১ ই সেপ্টেম্বর নতুন শতাব্দী শুরু হওয়া উদযাপন করেছিল। এরপর থেকেই চলছে দিন গোনা। গবেষণায় জানা গেছে ইথিওপিয়ার ক্যালেন্ডার শেষ সংস্করণ করা হয়েছিল ৫২৫ খ্রিস্টাব্দে। তৎকালীন রোমান চার্চ এই ক্যালেন্ডারটি সংস্করণ করেছিলো।

যেখানে গোটা বিশ্ব ব্যবহার করে গ্রেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডার, সেখানে ইথিওপিয়া ব্যবহার করে নিজেদের প্রাচীন ক্যালেন্ডার। যদিও এর জন্য পর্যটকদের কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। শোনা গেছে ক্যালেন্ডারে দিন সংখ্যা না মিললেও পর্যটকদের খুব একটা অসুবিধা পড়তে হয় না এই দেশে গেলে। তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা দেশ (Backward Country) ইথিওপিয়ার নিজস্ব ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বিশেষ ছুটির দিনগুলিও হয় বিশ্বের থেকে আলাদা দিনে। ইথিওপিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত আফার অঞ্চল। মনে করা হয় এখানেই প্রথম মানুষের বসতি শুরু হয়েছিল। এই এলাকায় খনন করতে গিয়ে ১ টি হোমিনেট কঙ্কাল পাওয়া যায় যার বয়স ৩.২ মিলিয়ন বছরের বেশি।

আরও পড়ুন 👉 Stamp Duty Price Increased: মাথায় হাত মধ্যবিত্তদের, এবার রাজ্যে বেড়ে গেল জমি-জমা, ফ্ল্যাট, বাড়ির দাম

যিশুখ্রিস্টের জন্ম ও মৃত্যুর উপর নির্ভর করেই তৈরি করা হয় ক্যালেন্ডার। ১৫৮২ সালে পেপ গ্রেগ্রি গ্রেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডার তৈরি করে। সেই ক্যালেন্ডারটি মেনে চলে সারা বিশ্ব। ডায়ানোসিয়াস এক্সিগুজ দ্বারা বিবেচনা করে তৈরি করা হয় এই ক্যালেন্ডার। ইথিওপিয়ার ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয় যিশুখ্রিস্টের জন্মের উপর ভিত্তি করে অন্য ১ টি বিকল্প গণনা পদ্ধতি অবলম্বন করে। কপটিক চার্চ এই ক্যালেন্ডারটি তৈরি করে। ২ ধরনের গণনার কারণে ক্যালেন্ডারে দিন সংখ্যায় ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। ইথিওপিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডারের চেয়ে পিছিয়ে গেছে ৭ বছর ৩ মাস। কিন্তু ইথিওপিয়ানরা তাদের ক্যালেন্ডার নিয়ে গর্বিত। তারা মনে করে ঔপনিবেশিক প্রবেশের প্রভাব সরিয়ে নিজেদের সংস্কৃতিকে বজায় রাখতে সাহায্য করছে এই ক্যালেন্ডারটি।

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোন ব্যবসায়িক লেনদেন হোক বা সাধারণ যোগাযোগ, সামাজিক আচার অনুষ্ঠান সবকিছুতেই পাশাপাশি চলছে গ্রেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডার এবং ইথিওপিয়ান ক্যালেন্ডার। গ্রেগ্রিয়ান ক্যালেন্ডারটির তুলনায় ইথিওপিয়ান ক্যালেন্ডারটি ৭ বছর পিছিয়ে থাকার কারণে এখানকার দিনগুলির সাথে মেলে না বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিনগুলি। আন্তর্জাতিক ছুটির দিনগুলিতেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। অন্যান্য দেশের সাথে ইথিওপিয়ার যোগাযোগের ক্ষেত্রে ১ প্রকার বাধা হয়ে দাঁড়ালেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে এই নিয়ে কোন আফসোস লক্ষ্য করা যায় না। তারা তাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে এগিয়ে দেওয়ার জন্য এই ক্যালেন্ডারটি কে মূল অস্ত্র হিসেবে নির্বাচন করেছে। এই ক্যালেন্ডারটির সাহায্য বিশ্বের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও নিজেদের সংস্কৃতির রক্ষার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও এগিয়ে রয়েছে ইথিওপিয়ান দেশের (Backward Country) বাসিন্দারা।