Pitambar Barman, son of a migrant labourer, stood ninth in the HS examination: অত্যন্ত অভাবের সংসারে বড় হওয়ার পড়ও উচ্চ মাধ্যমিকে দুর্দান্ত ফল করে, তাক লাগিয়ে দিল পীতম্বর (Pritambar Barman HS)। ৮ই মে প্রকাশ হয়েছে ২০২৪ এর উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল। এইবারের মেধা তালিকায় নবম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে প্রীতম্বর বর্মন। তার এই অবিশ্বাস্য সাফল্যে খুশি তার বাবা-মা, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন সবাই। এতটা অভাবের মধ্যেও যে পীতম্বর এত ভালো ফলাফল করতে পারবে তা আশাই করতে পারেননি তার বাবা-মা।
পীতম্বর বর্মন (Pritambar Barman HS) কালিয়াগঞ্জ এর প্রত্যন্ত গ্রাম ভেউরের বাসিন্দা। কালিয়াগঞ্জ তরঙ্গপুর নন্দকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে ২০২৪ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ২০২৪ উচ্চ মাধ্যমিকে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। অর্থাৎ ৯৭.৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছেন কলা বিভাগের ছাত্র পীতম্বর বর্মন। তার বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক। নেপালে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বছরে ২-১ বার বাড়িতে আসেন। সংসারের দায়িত্ব মূলত সামলান পীতম্বরের মা। তিনিও পেশায় একজন দিনমজুর।
দুস্থ পরিবার থেকে উঠে আসা প্রীতম্বর বড় হয়ে আইএএস অফিসার হবার স্বপ্ন দেখেন। সাক্ষাৎকারে প্রীতম্বর বর্মন (Pritambar Barman HS) জানান, তার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। তবে বছরের শুরু থেকে তিনি এতটা পড়াশোনা করেননি। পরীক্ষার ১.৫ থেকে ২ মাস আগে থেকে তিনি জোরকদমে পড়াশুনা শুরু করেন। প্রতিদিন নিয়মিত কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা পড়াশোনা করতেন তিনি। তিনি নিজে তো পরিশ্রম করেছেনই , তাছাড়াও তার স্কুল তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকা তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন।
প্রীতম্বর (Pritambar Barman HS) বাড়িতে ৪ জন গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়তেন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাড়াও গৃহ শিক্ষকরাও তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করেছে। বই হোক বা অন্য কিছু পড়াশোনার জন্য যে কোন সুবিধা অসুবিধায় পাশে থেকেছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। লাইব্রেরী থেকে বই নিয়ে এসেই মূলত পড়াশোনা করতেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে আসাতীত সাফল্য পাওয়ার পর ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। সুস্থ সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আইএএস অফিসার হিসেবে দেশের জন্য কাজ করতে চান তিনি।
ছেলের (Pritambar Barman HS) সাফল্যে মা তোরুলতা বর্মনের চোখে নেমে এসেছে আনন্দাশ্রু। তিনি জানালেন ছেলের সাফল্যে তিনি খুব খুশি। খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে সংসার চালাতে হয় তাকে। নিজেও দিনমজুরের কাজ করেন ছেলেদের কে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে দেবার জন্য। একদিকে যেমন ক্ষেতের কাজ করছেন, অন্যদিকে একা হাতে সামলাচ্ছেন সংসার আবার সঙ্গ দিচ্ছেন ছেলেদেরও। তিনি বলেন তিনি তার ছেলেদের সব সময় বলতেন “তোদের কষ্ট করে পড়াচ্ছি। ভালো করে পড়, যাতে তার ফলটা পাওয়া যায়।“ আজ ছেলের সাফল্যে কষ্টের ফল তিনি কিছুটা হলেও পেয়েছেন।