নানুরের নিখোঁজ সিপিএম নেতা সুভাষ চন্দ্র দে’কে নারকীয়ভাবে খুন করার অভিযোগ

Shyamali Das

Published on:

লাল্টু : বীরভূমের নানুর এলাকার সিপিআইএম নেতা সুভাষ চন্দ্র দে গত তিনদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন দেখে ঘনীভূত হয়েছে রহস্য, পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছিলেন অপহরণের। অবেশেষে আজ জানা যায়, তাঁকে নারকীয় ভাবে খুন করা হয়েছে। দেহ কয়েক টুকরো করে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

নানুর এলাকার বাঁশাপাড়া শাখার সম্পাদক ও দীর্ঘদিনের শ্রমিক সংগঠনের নেতা কমরেড সুভাষচন্দ্র দে। পেশায় এলআইসি এজেন্ট। সুভাষচন্দ্র দে গত ১৮ই অক্টোবর সকাল ৭:৩০ টায় বাড়ি থেকে বোলপুরে এলআইসি অফিস যাবার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যান। অফিসে কাজ সেরে অপর একজন এজেন্ট ইলামবাজারের নাসির সেখকে সঙ্গে নিয়ে ইলামবাজার যান। নাসিরকে নামিয়ে উনি কোনো এক অজানা উদ্দেশ্যে জয়দেব মোড় যাবেন বলে বেরিয়ে যান। শেষ মোবাইল লোকেশন অনুযায়ী রাত্রি ৮:৩০ মিনিটে জয়দেব মোড়ের নিকট রাউতারা (শিবপুর) গ্রাম। কিন্তু তারপর থেকে উনার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায় নি।

রাত্রি ৯ টা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরায় এবং মোবাইল অফ থাকায় বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন হয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। রাতেই ইলামবাজার থানায় জানানো হয়। পরদিন সকাল থেকে আবার খোঁজ শুরু হয়। পাশাপাশি সকাল ৮ টা নাগাদ নানুর থানায় মিসিং ডাইরিও করা হয়। সারাদিন অনেক খোঁজাখুঁজির পর বৈকাল ৬টা নাগাদ বাঁশাপাড়ার কাছেই বঙ্গছত্র গ্রামে একটি ডি.এড. কলেজের গেটের সামনে সন্ধান পাওয়া যায় সুভাষ বাবুর বাইকের। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ গিয়ে গাড়িটি নিয়ে যায় বাঁশাপাড়া ফাঁড়িতে।

তবে আজ সেই ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড় নেয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুবরাজপুরের খোঁজ মামুদপুর থেকে পুলিশ এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, প্রথমে তাকে মাথায় রডের বারি মেরে খুন করার পর দেহ টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি করে একটি পুকুরের পাড়ে পুঁতে দেওয়া হয়। ওই দম্পতি ঘটনার কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এরপর থেকেই পুলিশ দেহ উদ্ধারের চেষ্টায় পৌঁছায় পুঁতে দেওয়া এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা, দুবরাজপুর থানার ওসি শেখ মহঃ আলী, নানুর থানার ওসি। তারা পুকুরের পাড়ে পৌঁছে পুলিশ মাটি খুঁড়ে দেহ উদ্ধার করে টুকরো টুকরো অবস্থায় বস্তাবন্দি। তবে কি কারনে খুন তা এখনো স্পষ্ট নয়।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজ সুভাষ চন্দ্র দে সূঁচপুর গণহত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। যদিও হাইকোর্টের নির্দেশে পরে তিনি বেকুসুর খালাস পান।