নিজস্ব প্রতিবেদন : রবিবার বীরভূমের মহঃবাজার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক চিকিৎসক করোনা পজিটিভ হন। তিনি মহঃবাজার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি সিউড়ির নিবেদিতা পল্লীর একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সিউড়ির নিবেদিতা পল্লীতে ভাড়া থাকা ছাড়াও তিনি সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের হাটজানবাজার এলাকায় একটি ওষুধের দোকানে রোগী দেখতেন। রোগী দেখতেন সিউড়ির জে.এল. ব্যানার্জি রোডে থাকা প্যাথল্যাবেও। এছাড়াও মহঃবাজার ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন তিনি বলেও জানা গিয়েছে।
ওই চিকিৎসক করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর পেতেই পুলিশ প্রশাসনের তরফ থেকে সিউড়ির হাটজানবাজার এবং মহঃবাজারের যেসকল এলাকায় তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন সেই দোকানগুলি এবং তার পার্শ্ববর্তী দোকানগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই সকল দোকানের মালিক এবং দোকানের কর্মচারীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু যিনি করোনা আক্রান্ত অর্থাৎ ওই চিকিৎসকের কোন রকম খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না সকাল থেকেই। আর এনিয়েই জেলাজুড়ে শুরু হয় শোরগোল। অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের প্রচেষ্টায় ওই চিকিৎসককে আয়ত্বে আনা হয় এবং তাঁকে বোলপুর কোভিড পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়, সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সন্নিকট থেকে তাঁকে ধরা হয়। তাঁকে বোলপুর কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে চিকিৎসার জন্য। কিন্তু এই চিকিৎসক ধরা দেওয়ার আগে কার কার সংস্পর্শে এসেছেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও বীরভূম জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং তাদের কোভিড টেস্ট ও অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করার বন্দোবস্ত চলছে।
তবে এই চিকিৎসকের এমন কর্মকাণ্ডকে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। এমনকি তাদের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে এযাবত কোন চিকিৎসকের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায়নি। সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে যে, ওই চিকিৎসকের শরীরে দু-তিন দিন আগে থেকেই করোনা উপসর্গ ছিল। তার পরেও তিনি তার প্রাইভেট প্র্যাকটিস চালিয়ে যান। কিন্তু তিনি কেন এমনটা করলেন তাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। তদন্তে তিনি দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জেলা প্রশাসন।