BJP in West Bengal: ‘যা ভাবছেন তার থেকেও অনেককিছু’, বাংলায় বিজেপির ফল নিয়ে ৫ পয়েন্ট প্রশান্ত কিশোরের

নিজস্ব প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার পালা শুরু হয়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। এখন চলছে সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতি। নির্বাচন কমিশন ভোটের দামামা বাজিয়ে দিতেই এই প্রস্তুতির তৎপরতা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। আর এসবের মধ্যেই দেশ ও বাংলায় বিজেপির ফল নিয়ে মুখ খুললেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)।

যে প্রশান্ত কিশোর এক সময় বিজেপির ভোট কুশলী হয়ে কাজ করেছিলেন, যে প্রশান্ত কিশোরকে ২০২১ সালে ফের জয় এনে দিতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলকে, সেই প্রশান্ত কিশোর বাংলায় বিজেপির ফল সারপ্রাইজিং হবে বলেই জানিয়ে দিলেন। এমনকি তার কথায় স্পষ্ট, যা ভাবা হচ্ছে তার থেকেও অনেক কিছু হতে পারে। তিনি সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন বাংলায় বিজেপির এমন ফলাফলের ভবিষ্যদ্বাণী এবং দেশে ফের মোদি সরকার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরবে তা নিয়েও কোন সন্দেহ নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।

বাংলায় বিজেপির ভালো ফলাফল হবে এই বিষয়টিকে স্বীকার করে নিয়ে প্রশান্ত কিশোর এর পিছনে ৫টি কারণ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, “অনেকে রয়েছেন যারা আমার এই সকল কথার জন্য আমাকে বিজেপির দালাল বলতে পারেন। কিন্তু আমার নিজের কর্ম ক্ষেত্রে সৎ থাকার জন্য আমাকে এসব কথা বা অনুমান জানাতেই হবে।” চলুন দেখে নেওয়া যাক বাংলায় বিজেপির ভালো ফলাফলের পিছনে কোন ৫টি কারণ উল্লেখ করছেন প্রশান্ত কিশোর।

১) ব্যবহার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার বাংলায় প্রচারে এসে একবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করেননি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদির সরাসরি আক্রমণ সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলেছিল। সেই জায়গায় এবার রণনীতি বদলে প্রধানমন্ত্রীর থেকে শুরু করে অন্যান্যরা মমতার বদলে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করছে।

২) অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে বিজেপি বড় সফলতা পেতে পারে। কেননা রাজবংশী হলো মতুয়া সম্প্রদায়ের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম তপশিলি জাতি। উত্তরবঙ্গের রাজবংশীদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। আর এসবের কারণে উত্তরবঙ্গে বিজেপি আটটি লোকসভা কেন্দ্রে জয় যুক্ত হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

৩) পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বিজেপিকে অনেক সুবিধা দেবে বলেই মনে করছেন পিকে। একদিকে তৃণমূল, অন্যদিকে বিজেপি আর অন্যদিকে বাম-কংগ্রেসের লড়াইয়ের ফলে ভোট বন্টনের অনেক সুবিধা পাবে বিজেপি বলেই মনে করছেন তিনি।

আরও পড়ুন 👉 Lok Sabha Election Opinion Poll West Bengal: পিছলে পড়বে তৃণমূল! বাংলায় তরতরিয়ে বাড়বে বিজেপি! বড় ইঙ্গিত দিল এই সংস্থা

৪) পশ্চিমবঙ্গে ১ কোটি ৮০ লক্ষের বেশি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। একইভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষ রয়েছেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের। এক্ষেত্রে তারা যে কোন রাজনৈতিক দলের খেলা ঘোরানোর জন্য যথেষ্ট। এক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সিএএ চালু করে দেওয়ার ফলে এই সকল মানুষদের বড় অংশের সমর্থন পাবে বিজেপি। কেননা সিএএ চালু হওয়ায় রাজবংশী থেকে শুরু করে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা অনেক সুবিধা পাবেন। এই সকল মানুষদের সমর্থনে বিজেপি ১০ থেকে ১২টি আসনে এমনিতেই এগিয়ে থাকবে। কেননা রাজ্যে হিন্দুদের মধ্যে এই সকল সম্প্রদায়ের মানুষেরা রয়েছেন ২৩ শতাংশ।

৫) পিকের মতামত অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যে কারণে সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস অথবা জাতীয় কংগ্রেসের মতো প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তাদের নিয়ে নানান পরিকল্পনা করলেও বিজেপি কিন্তু অন্য রণনীতি নিয়ে কাজ করছে। এর ফলে হিন্দু ভোট একত্রিত হচ্ছে। যেখানে বাংলায় ৭১% মানুষের বাস, সেখানে হিন্দু ভোট একত্রিত হওয়া মানেই বিজেপি অ্যাডভান্টেজ পাবে। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা যায় ৫৫ শতাংশের বেশি হিন্দু ভোট বিজেপির ঝুলিতেই গিয়েছে।