Portable Hospital: এক যুগান্তকারী ঘটনার সম্মুখীন ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা, প্রত্যন্ত এলাকায় পরিষেবা দেবে পোর্টেবল হসপিটাল। ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুক্ত হলো এক যুগান্তকারী পদ্ধতি। এখন থেকে প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে পোর্টেবল হসপিটালের (Portable Hospital) মাধ্যমে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদের চিকিৎসা প্রদানের উদ্দেশ্যে উদ্যোগ নিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বায়ু সেনা বিভাগ। তারা তাদের চেষ্টায় সম্পূর্ণ সফল। ১৫ হাজার ফিট উপর থেকে মাটিতে নামানো সম্ভব হল একটি আস্ত চলমান হাসপাতাল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষত সীমান্ত এলাকায় আহত সেনাবাহিনীর চিকিৎসার জন্য একমাত্র ভরসা ছিল এয়ার লিফট। কিন্তু বিষয়টি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই পোর্টেবল হাসপাতালের মতন একটি অভিনব ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। মূলত সেনাবাহিনীদের সুরক্ষার্থে চালু করা হয়েছে এই ব্যবস্থা।
এই পোর্টেবল হাসপাতালটির (Portable Hospital) একটি নাম রেখেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। নাম রাখা হয়েছে আরোগ্য মৈত্রী হেলথ কিউব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিষেবা দেবে এই পোর্টেবল হাসপাতাল। এখন আর আহতদেরকে হাসপাতালে আসতে হবে না। আহতদের সাহায্য করতে তাদের কাছেই উড়ে যাবে এই হাসপাতাল। অনেক সময় যুদ্ধে আহত কোন সেনাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে আসতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। এই সমস্যা মেটাতে যুদ্ধক্ষেত্রেই সেনাবাহিনীকে চিকিৎসা দিতে তৈরি করা হয়েছে এই পোর্টেবল হাসপাতাল। সম্প্রতি ১৫ হাজার ফিট উপর থেকে বায়ুসেনার হারকিউলিস বিমান থেকে প্যারাসুটে করে মাটিতে নামানো হয়েছে এই পোর্টেবল হাসপাতালকে।
ভারতের এই যুগান্তকারী সৃষ্টি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের দরবারেও। বিশ্বের প্রথম পোর্টবেল হাসপাতাল (Portable Hospital) হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে ভারতের আরোগ্য মৈত্রী হেলথ কিউব। ভারতীয় আধুনিক ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হল নতুন অধ্যায়। ভারত সরকারের অধীনস্থ সংস্থা এইচএলএল লাইফ কেয়ারের পক্ষ থেকে তিরুবন্তপুরামে তৈরি করা হয়েছে এই পোর্টবেল হাসপাতাল। এটিকে মূলত প্রোজেক্ট ভীষ্মের অনুপ্রেরণাতে তৈরি করা হয়েছে। তথ্যসূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে থাকবে সাধারণ হাসপাতালের মতো ৭২ রকম সুযোগ সুবিধা। এই চলমান হাসপাতালের মধ্যেও থাকবে একটি ছোট্ট আইসিইউ। পাশাপাশি থাকবে অপারেশন থিয়েটার, রক্ত পরীক্ষা এবং এক্সরে করার সুযোগও। এ ছাড়া জল, খাবার, রান্নাঘর, বিদ্যুৎ জেনারেটরের ব্যবস্থাও থাকবে এই হাসপাতালে। এছাড়াও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থাও রাখা হবে।
আরো পড়ুন: যাত্রী বহনে সক্ষম ইলেকট্রিক রিক্সা, কিলোমিটার প্রতি খরচ মাত্র ৬ পয়সা
সৈনিকদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে বলেই যে শুধুমাত্র সৈনিকরা ব্যবহার করবেন বিষয়টা তেমন নয়। প্রান্তিক এলাকার সাধারণ জনগণের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন অনুযায়ী পরিষেবা দেবে পোর্টেবল হাসপাতাল এই হাসপাতাল থেকে পোড়া, মাথা ফাটা, মেরুদণ্ড বা শরীরের অন্য কোন হাড় ভেঙে যাওয়া, অথবা ছোটখাটো আঘাত, বুকের সমস্যা ইত্যাদি সমস্যার প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া যাবে। চলমান হাসপাতালকে (Portable Hospital) কোন মেডিকেল ক্যাম্প বলে ভুল করবেন না। এটা প্রকৃতপক্ষে একটি হাসপাতাল। এখানে একসাথে ২০০ জনেরও বেশি রোগীকে পরিষেবা প্রদান করা সম্ভব। কিউবগুলির ওজন এতই কম যে খুব সহজেই এগুলিকে আকাশ পথে বহন করা যায়। আর এয়ার ড্রপের পর তাকে যেকোনো জায়গায় স্থাপন করা যায়।
Showcasing jointness, #IndianAirForce & #IndianArmy conducted first-of-its-kind paradrop of indigenously-made world's 1st portable hospital at 15,000ft elevation. Aarogya Maitri Health Cube is part of BHISHM (Bharat Health Initiative for Sahyog, Hita & Maitri) to enhance HADR… pic.twitter.com/4gz7pH46cq
— Ministry of Defence, Government of India (@SpokespersonMoD) August 17, 2024
ভারতীয় সেনার এই যুগান্তকারী সৃষ্টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, একটি হাসপাতাল তৈরি করতে ব্যাপক রকম খরচ হয়। একেবারে সাধারণ একটি হাসপাতাল তৈরি করতেও ন্যূনতম দেড় কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তাছাড়া প্রত্যন্ত এলাকায় একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এই হাসপাতাল স্থাপন করা এবং যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা বেশ সমস্যা জনক এবং সময় সাপেক্ষ তো বটেই। সেখানে পোর্টেবল ((Portable Hospital)) হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করা যায় মাত্র ৮ মিনিটে। এয়ার ড্রপের পর হাসপাতাল স্থাপন করে চিকিৎসা ব্যবস্থা শুরু করতে সময় লাগতে পারে খুব বেশি হলে ৮ মিনিট। তাছাড়া শুধুমাত্র স্তর ভাগে নয়, প্রয়োজনমতো জলভাগেও যেকোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া যেতে পারে এই হাসপাতালকে। তাই প্রত্যন্ত এলাকার জন্য পোর্টেবল হাসপাতাল সাধারণ হাসপাতালের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী বলে মনে করছে সেনাবাহিনী।