অমরনাথ দত্ত : পরিবেশ সম্পর্কিত নানান বিধিনিষেধ এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে বছর কয়েক ধরে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ঝঞ্ঝাটের মধ্যে বেশ কয়েকবার পৌষ মেলা হবে না বলে ঘোষণা করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে পৌষ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে চলতি বছর যে পৌষ মেলার আয়োজন হচ্ছে না তাতেই সিলমোহর দিয়ে দিলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পৌষ মেলা না হওয়ার মূলে রয়েছে করোনা কাঁটা। যা নিয়ে আগেই জল্পনা ছিল, তবে সেই জল্পনার অবসান ঘটলো কর্তৃপক্ষের সিলমোহরে।
করোনা অতিমারির কথা মাথায় রেখে চলতি বছর বাতিল হয়েছে একের পর এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে সামাজিক অনুষ্ঠান। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাঙ্গালীদের সবথেকে বড় উৎসব দুর্গোৎসব পালিত হয়েছে। তবে তা হলেও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে পৌষ মেলা আয়োজিত হবে না তা ঘোষণা করা হলো সোমবারের বিশ্বভারতীর কোর্ট সদস্যদের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর। বিশ্বভারতীতে মোট ৯০ জন কোর্ট সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭০ জন এদিনের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। আর তারপরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তবে পৌষ মেলা আয়োজিত না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্বভারতীতে হবে পৌষ উৎসব। ৭ই পৌষের পৌষ উৎসবের সাথে জড়িয়ে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন কবিগুরুর স্মৃতি, ঐতিহ্য। বৈতালিক, ছাতিমতলায় উপাসনা, আশ্রম বন্ধুদের শ্রাদ্ধবাসর, খ্রিষ্টোৎসব এসব মিলিয়েই ঐতিহ্যবাহী এই পৌষ উৎসব।
পৌষ উৎসব আয়োজিত হতে হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন। ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৭ই পৌষ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন। এরপর ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ৭ পৌষ স্থাপিত হয় উপাসনা মন্দির। আর এই দিন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দীক্ষা দিবস উপলক্ষে উপাসনার মধ্য দিয়ে পৌষ উৎসব শুরু হয়। পরবর্তীকালে ১৮৯৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে পৌষ উৎসব আয়োজিত হয়ে আসছে।