পৌষমেলা শেষ হয়েও শেষ হয় না! ব্যবসায়ীদের তুলতে এবার লাঠি হাতে নিরাপত্তাকর্মীরা

অমরনাথ দত্ত : মেলা শেষ হয়ে গেছে গত শুক্রবার। হ্যাঁ, বিশ্বভারতীর সূচি অনুযায়ী এটাই জানা যায়। কিন্তু আদৌ কি শেষ হয়েছে মেলা! সেই প্রশ্নই জাগছে বারবার। কেননা, ব্যবসায়ীরা তাঁদের দোকান বা স্টল তো উঠাতেই চাইছেন না।অবশেষে বাধ্য হয়ে লাঠি ধরতে হলো বিশ্বভারতী নিরাপত্তারক্ষীদের।

প্রথমটা শুনে হয়তো ভাববেন এ কি বলছে! কিন্তু এটাই সত্যি। পৌষমেলা শুক্রবার শেষ হয়ে গেলেও রবিবার পর্যন্ত মেলার মাঠে বসে থাকতে দেখা গেল অজস্র দোকানদারদের। তারা কোন মতেই মেলার মাঠ ছাড়তে চাইছেন না, আরও আরও বেচাকেনার তাগিদে। কিন্তু করার কিছু নেই, অন্যদিকে বিশ্বভারতীর মাথায় ঘুরছে পরিবেশ আদালত। কারণ প্রতিবছর এই পরিবেশ আদালতেই ঠোকা খেতে হচ্ছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে, পৌষমেলা নিয়ে দূষণের দোয়ায়।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মেলা থেকে দোকানদারদের উঠে যাওয়ার জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছিল শুক্রবার, শুধু নোটিশ ব্যবসায়ীদের সাথে আগাম চুক্তিও ছিল তাই। পাশাপাশি শনিবার উপাচার্য মেলায় এসে মেলা তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন বিভিন্ন দোকান মালিকদের। কিন্তু তাতেও কি! শেষমেষ শনিবার বিশ্বভারতী পক্ষ মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয় মাঠের ঢোকার মূল গেট বন্ধ করে দেয়, কিন্তু এতেও তৈরি আরও এক সমস্যা। সেই সমস্যা আবার গড়ায় শান্তিনিকেতন থানা পর্যন্ত। সেখানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, ‘ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নাকি মেলার দিন বাড়ানোর জন্য হুমকি দিচ্ছেন।’ সংঘাতে বাড়তেই চলে।

অবশেষে এত জল ঘোলার পর রবিবার বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা লাঠি উঁচিয়ে মেলার স্টলে স্টলে গিয়ে মেলা তুলতে বাধ্য করে দোকানদারদের। এনিয়ে আবার শুরু হয় বিতর্ক। প্রশ্ন ওঠে, ‘এই তান্ডব নাকি উপাচার্যের নির্দেশেই’। শুধু তাই নয়, লুটপাট ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগও ওঠে। কিন্তু সে যাই হোক, প্রশ্ন একটাই, ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলাকে ঘিরে কেন প্রতিবছর এত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়! কেন মেলার মেলার সূচি, মেলার নিয়মাবর্তীতা মানা হয় না! শুধুই মুনাফা, নাকি অন্য কিছু! প্রশ্ন বিশিষ্ট মহলের।