পৌষমেলা করবে না বিশ্বভারতী, সিদ্ধান্ত কর্মসমিতির বৈঠকে

অমরনাথ দত্ত : পশ্চিমবঙ্গের আকর্ষণীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হলো শান্তিনিকেতন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মৃতিবিজড়িত এই শান্তিনিকেতনের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে পৌষমেলা। তবে এই পৌষমেলা নিয়ে প্রতিবছর কোন না কোন বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। যে কারণে এবার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিল আর ভুবনডাঙার মাঠে পৌষমেলা করবে না বিশ্বভারতী। তবে রীতি মেনে পৌষ উৎসব পালন করবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার বিশ্বভারতীতে বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে সেই বৈঠকে জানানো হয়, পৌষমেলা করাতে অপারগ বিশ্বভারতী। আর বিশ্বভারতীর কর্মসমিতির এমন সিদ্ধান্তে আগামী দিনে শান্তিনিকেতনের ভুবনডাঙ্গার মাঠে পৌষমেলা হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তবে শুধু পৌষমেলা নয়, পাশাপাশি দোলের দিন বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব না করানো নিয়েও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

চলতি বছর শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা এবং বসন্ত উৎসব নিয়ে প্রথম থেকেই নানান অস্থিরতা দেখা যায়। তবে শেষমেশ পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হলেও চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায় মেলা শেষে। যেখানে উপাচার্যকে নিজে দাঁড়িয়ে দোকানদারদের বাধ্য করতে হয় মেলার মাঠ ছাড়ার জন্য। আর এর পরেই শুরু হয় অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পালা। শান্তিনিকেতনের ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে শান্তিনিকেতন থানায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী সহ আরও বেশ কয়েকজনের নামে শ্লীলতাহানি সহ নানান অভিযোগ দায়ের করা হয়। অন্যদিকে চলতি বছরেই বিশ্বভারতীতে দোলের দিন বসন্ত উৎসব না করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এর মূলে ছিল গত বছরের বিশৃঙ্খলা। তবে শেষমেশ দফায় দফায় আলোচনায় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দোলের দিন বসন্ত উৎসব করানোর দায়িত্ব নেওয়া হয়। যদি তাও সম্ভব হয়ে ওঠেনি দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায়।

আর এই মেলা ও বসন্ত উৎসব নিয়ে বিশ্বভারতী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে পদ্মশ্রী প্রাপ্ত চিকিৎসক তথা বিশ্বভারতীর রাষ্ট্রপতি মনোনীত প্রতিনিধি সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “প্রতিবছর পরিবেশ আদালতের কাছে জরিমানা দিয়ে এবং বোলপুরের মানুষের বিরাগভাজন হয়ে এইভাবে মেলা চালানো সম্ভব নয় বিশ্বভারতীর পক্ষে। পাশাপাশি বিশৃংখলার কথা মাথায় রেখে দোলের দিন বিশ্বভারতীতে বসন্ত উৎসব করা হবে না। সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে সেই উৎসব পরে অন্য কোনদিন করা হবে।”

আর এই সকল অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ এবং প্রতিবছর শান্তিনিকেতনের উৎসবকে কেন্দ্র করে নানান বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার কারণেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।