নিজস্ব প্রতিবেদন : বাংলা টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অবদান সম্পর্কে সকলেই কম বেশি জানেন। ঝিমিয়ে পড়া বাংলা চলচিত্র জগতকে নতুন প্রাণ দিয়েছিলেন তিনি। তার দীর্ঘ কর্মজীবনে শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ, রাজমহল, অটোগ্রাফ, দেবা, প্রাক্তণ, জ্যেষ্ঠপুত্র, বাইশে শ্রাবণ, দৃষ্টিকোণ, দোসর, চোখের বালি ইত্যাদি বিভিন্ন ধারার চরিত্রে অভিনয় করে তিনি টলিউড ইন্ডাস্ট্রিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন।
তার বর্ণময় কর্মজীবনের মতো তার ব্যক্তিগত জীবনও সিনেমার মতোই রোমাঞ্চকর। রিল লাইফের মত তার রিয়েল লাইফও চমকপ্রদ। বিভিন্ন সময় সিনেমা করতে করতে একাধিক নায়িকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন অভিনেতা, বিয়েও করেছেন তিনবার। তাই কর্ম জীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবন সমস্ত বিষয় নিয়েই তিনি বারংবার খবরের কাগজের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রথমবার বিয়ে করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়কে। সেই সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর তিনি দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন অপর্ণা গুহঠাকুরতাকে। কিন্তু অভিনেতার দ্বিতীয় সেই বৈবাহিক সম্পর্কও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, এক্ষেত্রেও বৈবাহিক সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে। অভিনেতা তারপর টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অর্পিতা পালকে বিয়ে করেন, বর্তমানে অর্পিতার সাথেই সুখে ঘর করছেন তিনি।তৃষানজিৎ নামে তাদের একটি ছেলেও রয়েছে।
প্রসেনজিতের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর প্রসেনজিতের দ্বিতীয় স্ত্রী অপর্ণা গুহ ঠাকুরতার সম্পর্কে সেই ভাবে কিছুই জানা যায় না। প্রসেনজিৎ নিজেও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও কন্যা সন্তানের উল্লেখ করেন নি কখনো। কিন্তু মানুষের মনে সব সময় কৌতুহল রয়েই গেছে, কোথায় আছেন প্রসেনজিতের দ্বিতীয় স্ত্রী? এখন কেমন আছেন তিনি, কেমনই বা আছে প্রসেনজিৎ অপর্ণার কন্যা সন্তান, জানেন?
একসঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে করতেই প্রসেনজিৎ আর দেবশ্রীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, এরপর ১৯৯২ সালে তারা বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্ক ঠিকঠাকই চলছিলো কিন্তু ‘উনিশে এপ্রিল’ সিনেমায় দেবশ্রী রায়ের জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পর দুজনের মধ্যে ইগোর লড়াই তৈরি হয়ে যায়। দেবশ্রী রায়ের কথায়, সেই সময় প্রসেনজিৎ চাননি দেবশ্রী আর অভিনয় করুক। অন্যদিকে ক্যারিয়ারের মধ্যগগণে অভিনয় জীবন ছেড়ে দিতেও প্রস্তুত ছিলেন না অভিনেত্রী।
ফলে ১৯৯৫ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে যায় এবং এর ঠিক দুই বছর পর ব্যবসায়ী পরিবারের মেয়ে অপর্ণা গুহ ঠাকুরতাকে বিয়ে করেন বুম্বাদা। দুই বছর পর অপর্ণা আর বুম্বাদার মেয়ে প্রেরণার জন্ম হয় আর এই সময়ই প্রসেনজিৎ এর জীবনে তৃতীয় নারীর পদার্পণ ঘটে। অন্নদাতা, প্রতিবাদ, দেবার মতো একাধিক ছবি করার সুবাদে প্রসেনজিৎ এর সাথে আলাপ হয় টলিউডের অর্পিতা পালের।
অর্পিতার সাথে বেশ কয়েকটি ছবি একসাথে করতে করতে অর্পিতাকে ভালোবেসে ফেলেন প্রসেনজিৎ। অন্যদিকে স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে মানতে পারেননি অপর্ণা। ফলে ২০০০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাদের। বিবাহ বিচ্ছেদের পর মেয়েকে নিয়ে দিল্লীতে চলে যান অপর্ণা। একাই রোজগার করে বড় করেন মেয়েকে। ব্যক্তিত্বময়ী অপর্ণা আর কখনো বুম্বাদার সাথে যোগাযোগ রাখেন নি। সিঙ্গেল মাদার হিসেবেই মেয়েকে বড় করেছিলেন তিনি। এখন তাদের মেয়ে প্রেরণার বয়স ২১ বছর। মেয়ে প্রেরণাও বাবার সাথে যোগাযোগ রাখে না, এমনকি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পদবীরও ব্যবহার করে না প্রেরণা।
কিছুদিন আগে পরিচালক সুদেষ্ণা রায়ের সঙ্গে একটি ছবি প্রকাশ করেছিলেন অপর্ণা ও প্রেরণা। সেই ছবিতে প্রেরণাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন সকলে। সৌন্দর্য্যে বলিউডের অভিনেত্রীদেরকেও হার মানাবেন তিনি।
দৃঢ়চেতা মায়ের মত প্রেরণাও নিজের আলাদা পরিচিতি তৈরি করতে চান। তবে বর্তমানে প্রেরণার চলচ্চিত্রের জগতে প্রবেশ করার কোন ইচ্ছা নেই বলেই জানা গিয়েছে।