নিজস্ব প্রতিবেদন : দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সোমবার বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, এই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে জিততে হলে লম্বা লড়াইয়ের জন্য তৈরি থাকতে হবে দেশবাসীদের। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মাধ্যমেই ফুটে উঠছে আগামী ১৪ই এপ্রিল লকডাউন উঠবে কিনা তার এক পরিষ্কার চিত্র। যদিবা ১৪ ই এপ্রিল লকডাউন ওঠে, তাহলেও হুট করে সব খুলে যাবে না। পর্যায়টা হবে ধীরে ধীরে। আবার খুব তাড়াতাড়ি স্কুল, কলেজ, অফিস খুলে যাবে এমনটা ভাবাও উচিত নয়। এগুলির পাশাপাশি রেল, বিমান পরিষেবাও স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।
সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি বৈঠক করেন। তবে সেই বৈঠকে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের স্বার্থে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর মত পথে হাঁটতে পারে সরকার।আর যদিওবা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তা দেশের জনসাধারণকে সঠিক সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।
আর বৈঠক শেষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন জেলা স্তরে প্রশাসকদের সঙ্গে কথা বলে তবেই পরামর্শ দিন কীভাবে লকডাউন তোলা ঠিক হবে। পাশাপাশি গোটা বিশ্বের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দেশের স্বার্থে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতেই পারে। আর যদি কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয় তাহলে তা সঠিক সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।”
তবে ভারতে করোনা সংক্রমণ নিয়ে আশার আলো এটাই যে, সংক্রামিত ব্যক্তিদের সংখ্যা রয়েছে তার সিংহভাগই (৮০%) রয়েছে দেশের ৬২ টি জেলায়। যে কারণে এই সকল জায়গাগুলিতে লকডাউন বজায় রেখে দেশের বাকি অংশের লকডাউন তুলে দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানা যায় সূত্র মারফত। তবে এখানেও আরও এক চিন্তার বিষয় রয়েছে। আর সেই চিন্তা হলো, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন দেশে লকডাউন জারি করেছিলেন তখন দেশে সংক্রামিত ব্যক্তিদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০০-এর কিছু বেশি। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৪৫০০-এর কাছাকাছি। অর্থাৎ লকডাউন চলা অবস্থাতেও দেশে সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় চার হাজার। এমনকি মৃতের সংখ্যাও ছাড়িয়ে গেছে ১০০, সংখ্যাটা ১০৯। আর এরকম পরিস্থিতিতে কী করা উচিত তা নিয়ে পরিকল্পনা করছে সরকার।
অন্যদিকে আবার লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও।তিনি সংবাদ মাধ্যমে তার রাজ্যে করোনা সংক্রামিত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ার জন্য দায়ী করেছেন তবলিঘি জমায়েতকে। এই মুহূর্তে তিনি মনে করেন লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই।লকডাউনের মেয়াদ জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রসঙ্গক্রমে সিঙ্গাপুরের মতো ছোট দেশ লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে একমাস।
#Watch | Will #CoronavirusLockdown end on April 14? What Minister Prakash Javadekar said after Union Cabinet meet.
Read here: https://t.co/fdCaha7J7b pic.twitter.com/vHbPWAAlNf
— NDTV (@ndtv) April 6, 2020
তবে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের কোন কোন জায়গায় কৃষিকাজ শুরু করা যেতে পারে তা নিয়ে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের কাছে পরামর্শ চান। পাশাপাশি তিনি পরামর্শ চেয়েছেন দেশের কোন কোন জায়গায় কল কারখানা খোলার মত পরিস্থিতি রয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই সমস্ত বিষয়ে জেলাস্তরে সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে এখনও কোন পাকা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি কেন্দ্র সরকার। সবই রয়েছে আলোচনার টেবিলে।