আরও ৫ মাস বিনামূল্যে রেশনে খাদ্যশস্য, বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদন : ভারতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মার্চ মাসের ২৪ তারিখ থেকে দেশব্যাপী জারি হয় লকডাউন। আর এই লকডাউন চলাকালীন দেশের দুঃস্থ দরিদ্র মানুষদের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে গরিব কল্যান অন্ন যোজনা প্রকল্পের আওতায় মাথাপিছু বিনামূল্যে ৫ কেজি করে চাল অথবা ৬ কেজি করে গম দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। সেসময় ঘোষণা করা হয়েছিল আগামী তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিল, মে ও জুন বিনামূল্যে এই খাদ্যশস্য পাওয়া যাবে। তবে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সকল মানুষদের জন্য বড় ঘোষণায় জানান এই খাদ্যশস্য আগামী পাঁচ মাস বিনামূল্যে দেবে কেন্দ্র সরকার।

মঙ্গলবার লকডাউনের পঞ্চম দফা এবং আনলক ওয়ানের প্রথম পর্যায়ের শেষ দিন। আর এই শেষ দিনে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানান, নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, কেন্দ্র সরকারের প্রথম থেকেই নজর ছিল যাতে লকডাউন চলাকালীন যেন কোন গৃহস্থের বাড়িতে খাদ্যাভাব দেখা না দেয়। আর এজন্য কেন্দ্র সরকার ছাড়াও রাজ্য সরকারগুলিও যথেষ্ট কাজ করেছে, এগিয়ে এসেছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। সামনেই উৎসবের মরসুম। আর সেজন্য কারোর যেন কোন রকম খাদ্যাভাব না দেখা দেয় তার জন্য আরও পাঁচ মাস বিনামূল্যে রেশনের ব্যবস্থা করা হলো। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৮০ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। প্রতিমাসে প্রত্যেকের মাথাপিছু ৫ কেজি করে চাল অথবা ৫ কেজি করে গম দেওয়া হবে। আর এজন্য কেন্দ্র সরকার আরও ৯০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা অনুযায়ী আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত দেশের দুঃস্থ দরিদ্র মানুষেরা রেশনে বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী পাবেন। আর এই খাদ্যসামগ্রীতে চাল ও গম ছাড়াও মাসে পরিবারপিছু ১ কেজি করে ছোলা দেওয়া হবে।

আনলক ওয়ান মঙ্গলবার সমাপ্ত হয়ে যাওয়ার পর আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে আনলকের দ্বিতীয় ধাপ অর্থাৎ আনলক টু। আর এই পর্যায়ে কনটেইনমেন্ট জোন ছাড়া অন্যত্র লকডাউন থাকবেনা। যে কারণে আনলক ওয়ান পর্যায় শেষ হওয়ার আগেই সোমবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফ থেকে একটি নির্দেশিকা প্রকাশিত করা হয়। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী জানা যায় আনলকের দ্বিতীয় পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল, ধর্মীয় সমাবেশ, রাজনৈতিক সমাবেশ, পার্ক ইত্যাদি গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পাশাপাশি বাকি প্রায় সমস্ত বিষয় খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে কনটেইনমেন্ট জোন এলাকায় কড়া লকডাউন অনুযায়ী থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীদের জানান, এই আনলক পর্যায়ে আমাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। পরিবারের শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বেশি নজর দিতে হবে। সকলকে মাস্ক এবং দুই গজের দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।