শর্মিষ্ঠা চ্যাটার্জী : করোনা আবহে মানুষের জীবনযাত্রায় বিপুল পরিবর্তন এসেছে। কারণ এক সময় দীর্ঘ লকডাউনের ফলে জনজীবন যেনো থমকে গিয়েছিল তারপর আবার কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বিধিনিষেধ কিন্তু সর্বদা বজায় রয়েছে রাজ্যে। বিবাহ থেকে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান সবেতেই একটি নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে নিমন্ত্রিতদের। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে পড়েছেন কনে ও বরের বাড়ির লোকজন। কাকে ছেড়ে কাকে বাদ দেবেন এই চিন্তা এখন।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রিত দের সীমা ২০০ জন করে দিয়েছেন। এবার সেই বিধিনিষেধ কে যথাযথ মান্যতা দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে দেখা গেলো বর্ধমানের এক নব দম্পতিকে। স্বাস্থের কথা চিন্তা করে সমস্ত বিধিনিষেধ তারা পালন করার চেষ্টা করেছেন বিয়ের অনুষ্ঠানে।
নিয়ম মানা নয় তার সাথে সাথে বিয়েতে কিছু অভিনব সংযোজন। বিয়েতে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১০০ জন আর বাকি সমস্ত নিমন্ত্রিতরা গুগল মিটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি বিয়ের সমস্ত অনুষ্ঠান দেখতে পেরেছিলেন। বর্ধমানের ওই দম্পতি সন্দীপন ও অদিতি। প্রযুক্তির সাহায্যে এমন নতুন চিন্তা করেছিলেন। শুধু গুগল মিটে বিয়ে দেখা নয়, তার সাথে সাথে জ্যোমাটোর মাধ্যমে প্রত্যেকের বাড়িতে খাওয়ার পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁরা।
বিয়ের আসরে যে একের পর এক চমক ছিল তা কিন্তু মানতেই হবে। পরিবেশের কথা চিন্তা করে বর সাথে বরযাত্রী নিয়ে সাইকেল রেলি করে বিয়ে করতে পৌঁছলেন। বেশ কয়েক কিলোমিটার এরকম সাইকেল চালিয়ে বর পৌঁছন। এর অবশ্য যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে, কারণ হিসেবে সন্দীপন স্বীকার করেছেন, পরিবেশের কথা চিন্তা করেই এমন উদ্যোগ।
জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি সেইসঙ্গে কাছে পিঠে কোথাও গেলে আমরা যেনো সাইকেলের ওপরেই নির্ভর করে এই বার্তা পৌঁছে দিতেই তাঁর এমন অভিনব উদ্যোগ। তবে এতসব ব্যবস্থাপনা করতে কিন্তু বেশ বেগ পেতে হয়েছে উভয় পরিবারকে। কাকে ছেড়ে কাকে ডাকবেন বিয়েতে তাই খুঁজে বের করতে পারছিলেন না।
তবে শেষ ভালো যার সব ভালো। তেমনটাই হলো এই বিয়ের ক্ষেত্রে। সারা বিয়ের অনুষ্ঠানে অল্প কিছু সমস্যা বাদে সমস্ত আমন্ত্রিতরাই যথেষ্ট খুশি হয়েছেন। আর রীতিমতো ওই দম্পতি এখন সেলিব্রিটি। নেটিজেনরাও দম্পতির এমন সিদ্ধান্তের যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন।