ভারতের রাফাল নাকি চীনের J-20, শক্তির বিচারে কাকে এগিয়ে রাখছেন বিশেষজ্ঞরা

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : উদয়ম্ অজস্রম। অজস্র বার উড়ে শত্রুকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে রাফাল যুদ্ধবিমান। এই যুদ্ধ বিমানগুলি ফ্রান্স থেকে ৭০০০ কিলোমিটার উড়ে ভারতে আম্বালার বিমান ঘাঁটি ছুঁতেই প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, আম্বালায় পাখিরা সফলভাবে অবতরণ করেছে।

Advertisements

Advertisements

২০১৬ সালে ভারত ও ফ্রান্সের চুক্তি অনুযায়ী ৩৬ টি রাফায়েল ভারতের ধীরে ধীরে পাওয়ার কথা। তাঁরই প্রথম ধাপ হিসাবে ৫ টি রাফায়েল ভারত ফ্রান্সের কাছ থেকে পেল।‌ যা ভারতের বায়ুসেনাকে আরও শক্তিশালী করবে বলে মনে করছেন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া।

Advertisements

চীনকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় লাগাতার যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে এই রাফাল যুদ্ধবিমান গেমচেঞ্জারের ভূমিকা নিতে পারে। ইতিমধ্যেই ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশের সতর্ক প্রতিক্রিয়াও দিয়েছে।

পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আয়েশা ফারুকী সাংবাদিকদের জানান, “কোন কারণ ছাড়াই ভারত অনুপাতহীন অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে। এই অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং এই অস্ত্রের অভিমূখ কোন দিকে তাও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।”

এই অস্ত্র সঞ্চয় দক্ষিণ এশিয়ায় অস্ত্রের প্রতিযোগিতা শুরু করবে এবং ভারতের আগ্ৰাসী ভূমিকা থামাতে অবিলম্বে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। যদিও ইউরোপ থেকে আমেরিকার কূটনৈতিক মহল দক্ষিণ এশিয়ায় চিন আগ্ৰাসী ভূমিকা নিচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ শুরু করেছে। ভারতে রাফাল আসাকে কেন্দ্র করে চীনের বক্তব্যও সতর্কতামূলক। চীন জানিয়েছে, ভারত যেন আগ্ৰাসী পদক্ষেপ না নেয়। সেই সঙ্গে তীর্যক ভঙ্গিমায় জানিয়েছেন রাফায়েল তৃতীয় প্রজন্মের যুদ্ধবিমান। সে তুলনায় তাদের J-20 যুদ্ধবিমান অনেকবেশি শক্তিশালী।

চীনের দাবি J-20 পঞ্চম জেনারেশনের। রাফাল তৃতীয় জেনারেশনের। যদিও রাফাল হল ৪.৫ জেনারেশনের যুদ্ধবিমান। চীনের JF-17 চতুর্থ ও J-20 পঞ্চম জেনারেশনের হলেও তবে তা রাশিয়ার SU-35 যুদ্ধবিমানের উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে গড়া যুদ্ধ বিমান। এখনও পর্যন্ত এর কোন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা নেই। সেই তুলনায় রাফাল ৩০,০০০ ঘন্টা সাফল্যের সঙ্গে উড়ার ক্ষমতা প্রমাণ দিয়েছে। আফগানিস্থান, লিবিয়া, মালি, ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অপারেশনাল রেঞ্জে রাফাল J-20 চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে। যুদ্ধ বিমান বিশেষজ্ঞদের মতে, রাফাল বহন করতে পারে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত অস্ত্রগুলি। যেমন এমআইসি আকাশ থেকে আকাশে আঘাত হানতে পারে দৃশ্যের বাইরের শত্রুকে, ইন্টারসেপশন, কমব্যাট ও আছে আত্মরক্ষার মিসাইল ক্ষমতা।

এছাড়াও আছে লং রেঞ্জের আকাশ থেকে স্থলে আক্রমণের মিসাইল, লেসার বোম, আছে। জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে তাঁর প্রতিরোধের ক্ষমতা আছে। ইলেকট্রনিক্যাল স্ক্যানেড অ্যারি র‍্যাডার সিস্টেম যা খুব সহজে শত্রুর অবস্থান চিহ্নিত করে আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে।

রাফাল মিনিটে ৬০,০০০ ফিট উঁচু উড়তে পারে সেখানে J-20 মিনিটে গতি ৫,৯৮৪২.৫২ ফিট। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টেকনোলজি পাওয়ার দুই যুদ্ধবিমানের সমান এবং J-20 সম্বন্ধে চীনের সব বক্তব্য সত্য নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রতিবেশী দেশগুলোকে সতর্ক বার্তা দিয়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “এই বহুমাত্রিক ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমানগুলো ভারতের বায়ুসেনাকে আরও শক্তিশালী করবে। সঠিক সময়ে বায়ুসেনার সামরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি নিশ্চিত যে ১৭ স্কোয়াড্রন, দ্য গ্লোডেন অ্যারোজ তাদের মূলমন্ত্র ‘উদয়ম অজস্রম’ পালনে অবিরত থাকবে।” আকাশ যুদ্ধে রাফায়েল যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলছে ভারতের প্রতরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।

Advertisements