‘বিকাশ দুবে না হয়ে যায়’, বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়

Madhab Das

Updated on:

Advertisements

অমরনাথ দত্ত : একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক জমি দখলের লড়াই। বর্তমান করোনা আবহেও শাসক এবং বিরোধী কোনো রাজনৈতিক দলই একে অন্যকে বিনা লড়াইয়ে এক ইঞ্চি জমি ছেড়ে দিতে নারাজ। আর এই জমি লড়াইয়ে রাজনৈতিক দলগুলি নেমে পড়েছে প্রচার, কর্মীসভা এবং অন্যান্য কর্মসূচিতে। আর এই কর্মসূচিগুলির অঙ্গ হিসাবেই রবিবার বোলপুরে ‘আমার পরিবার, বিজেপি পরিবার’ কর্মসূচির প্রাক্কালে সাংবাদিক বৈঠক করা হয় বিজেপির তরফ থেকে।

Advertisements

রবিবার বিজেপির এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি তথা রাঢ়বঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মসূচি শেষে বীরভূমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কখনও নাম করে, কখনো আবার নাম না করে নানান কটাক্ষ করেন। আর এই কটাক্ষের মধ্যেই উঠে আসে সদ্য উত্তরপ্রদেশে এনকাউন্টার হওয়া ডন বিকাশ দুবের প্রসঙ্গ। মূলত এদিন তিনি বিকাশ দুবের এনকাউন্টারের সাথে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের তুলনা করেন।

Advertisements

বিজেপি নেতা রাজু বন্দোপাধ্যায় বলেন, “সারা ভারতবর্ষে ৭০০-র বেশি জেলা আছে। কিন্তু বীরভূমের অবস্থা কাশ্মীরের জেলা অনন্তনাগ, কুপওয়ারার সাথেও তুলনা করতে পারবেন না। কারণ ওখানে রোজ বোম-গুলি চলে না। কিন্তু এই বীরভূমে দেখবেন কোথাও না কোথাও নানুর বলুন, পাঁড়ুই বলুন, দুবরাজপুর বলুন, ইলামবাজার বলুন, সিউড়ি বলুন রোজ বোমা-গুলি চলছে, মা বোনেদের ইজ্জত লুটছে, তোলাবাজি চলছে, গুন্ডারাজ চলছে। অর্থাৎ কাশ্মীরের থেকেও অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে বীরভূমের। আর তার নেতৃত্ব কে দিচ্ছেন জানেন! আমি নাম করবো না, কারণ তার নামের সাথে আবার ঈশ্বরের নাম যোগ আছে।”

Advertisements

এর পাশাপাশি তিনি জানান, “ভারতীয় জনতা পার্টি আগামী দিনে ক্ষমতায় এসে বীরভূমকে যেমন ঠান্ডা করবে, ঠিক তেমনই গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই শান্তির বাতাবরণ নিয়ে আসবে। আর মনে রাখবেন বিজেপি যদি হিংসার পথে নামতো তাহলে বীরভূমে এতদিন ওই নেতা আর থাকত না। এতদিন থাকত না। বিজেপি হিংসায় বিশ্বাস করে না। তারা সংবিধানের উপর বিশ্বাস করে আর মানুষের শক্তির উপর বিশ্বাস করে। আর যিনি বীরভূমে রয়েছেন তিনি একজন ক্রিমিনাল। তার এখন জেলের ভিতর থাকা উচিত ছিল কিন্তু বাইরে আছেন। আর আপনারা লিখে রেখে দিন আমরা ক্ষমতায় আসার পর তাকে জেলের ভেতরেই পুড়বো। কেউ বাঁচাতে পারবে না। অক্সিজেন কম যায়, না বেশি যায়, তখন জেলের ভিতর ডাক্তার পরীক্ষা করবেন। না মমতা ব্যানার্জি, না অভিষেক ব্যানার্জি কেউ রক্ষা করতে পারবেন না।”

তিনি এত কথা কি তাহলে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের জন্যই বলছেন? আর সেই প্রশ্নের উত্তরে সরাসরি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “হ্যাঁ আপনাদের বীরভূমে যার নাম আদরের কেষ্ট। একজন ক্রিমিনাল। আর সেই ক্রিমিনালের বাইরে থাকার অধিকার নেই। আর কত বড় নেতা আমরাও দেখে নেব। হিম্মত থাকলে পুলিশকে সরিয়ে আমাদের সাথে লড়ুক। আপনারা পঞ্চায়েত ভোটের সময় দেখেছেন কিভাবে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল। আমি বললাম না কাশ্মীরের থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি করে দিয়েছে এই বীরভূমকে। কাশ্মীরের জেলাগুলিতেও এই আতঙ্ক এই সন্ত্রাসী যা বীরভূমে তৈরি করে দিয়েছে। মমতা ব্যানার্জি অভিষেক ব্যানার্জি তার হাত মাথায় হাত রেখে এটা তৈরি করেছেন। এবং আগামী দিন আপনারা দেখবেন, জানিনা কি হবে? বিকাশ দুবে না হয়ে যায়!”

বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে পাল্টা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল জানান, “কে এলো, কে গেলো এতে আমার কিছু এসে যায় না। এই ব্যাপারে আমি কিছু বলবো না। ওকে আমার হিরো বানিয়ে লাভ নাই। ও পালে এসেছে, পালে গরু ছাগল সবাই একসাথে চরে, ও চরে চলে যাবে।”

Advertisements