নিজস্ব প্রতিবেদন : কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ান প্রয়াত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর টুইট করে জানান তার ছেলে চিরাগ পাসওয়ান। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কেন্দ্রীয় এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু গত শনিবার তার শরীরে নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিলে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচার করতে হয়। যদিও তার পর থেকেই তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির দিকে যাচ্ছিল।
কেন্দ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রী রামবিলাস পাসওয়ানের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ১৯৪৬ সালের ৫ ই জুলাই তিনি বিহারের খাগারিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। বিহারের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর অন্যতম নেতা ছিলেন রামবিলাস পাসোয়ান। তিনি আটবার লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। আর বর্তমানে তিনি ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি হাজীপুরের সাংসদ ছিলেন। লোকসভায় তিনি জয়লাভ করেছিলেন ১৯৮০, ১৯৮৯, ১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯, ২০০৪ এবং ২০১৪ সালে।
১৯৬৯ সালে সংযুক্ত স্পেশালিস্ট পার্টির হয়ে বিধানসভায় তার পা রাখা। পরবর্তীকালে জয়প্রকাশ নারায়ণের একান্ত অনুগত হয়ে জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে তিনি আন্দোলনে নেমে ছিলেন। সে সময় তাকে দীর্ঘকাল জেলবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়। জরুরি অবস্থার পরবর্তীতে তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। পরে মোরাজি দেশাইয়ের সাথে হাত মিলিয়ে জনতা দলে যোগ দেন।
যদিও ২০০০ সালে সেই জনতা দল থেকে তিনি বেরিয়ে যান। এরপর তিনি নিজেই নিজস্ব রাজনৈতিক দল লোক জনশক্তি পার্টি (LJP) গঠন করেন। মৃত্যুকাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার একজন সাংসদ হয়ে বর্তমান মোদী সরকারের খাদ্যমন্ত্রী সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্ব সামলেছেন।
বিহারের এই পোড় খাওয়া নেতাকে কখনো এনডিএ, কখনো আবার ইউপিএ জোটের সাথে হাত মেলাতে দেখা গেছে। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যখন সমস্ত রকম সমীক্ষা বাজপেয়ি সরকারকে এগিয়ে রেখেছিল ঠিক সে সময় তিনি এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন। এরপর তিনি ইউপিএ জোটে যোগ দেন। সে সময় ইউপিএ জোট সরকারি এলে তিনি তার লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব পান। এরপর আবার ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে তার এনডিএতে প্রত্যাবর্তন হয়। তারপরে আবার মোদী ও শাহের হাত ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্বের পদে বসেন। যদিও ২০১৯ সালে তিনি লোকসভায় প্রতিদ্বন্দিতা করেননি। রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীত্ব সামলাচ্ছিলেন।
पापा….अब आप इस दुनिया में नहीं हैं लेकिन मुझे पता है आप जहां भी हैं हमेशा मेरे साथ हैं।
Miss you Papa… pic.twitter.com/Qc9wF6Jl6Z— युवा बिहारी चिराग पासवान (@iChiragPaswan) October 8, 2020
কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রী গত কয়েকদিন ধরে রোগে ভুগছিলেন বলে জানা যায়। যার পর শনিবার রাতে তার হৃৎপিন্ডে অস্ত্রোপচার করা হয়। আর এই অস্ত্রোপচারের পর আরো একটি অস্ত্রোপচারের কথা ছিল বলে জানিয়েছেন তার ছেলে চিরাগ পাসওয়ান। কিন্তু সেই অস্ত্রোপচার হওয়ার আগেই লড়াইয়ে হার মানতে হলো কেন্দ্রীয় এই মন্ত্রীকে। ভারতীয় রাজনীতির পোড়খাওয়া এই নেতাকে হারিয়ে শোকোস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।