26/11 Terror Attack: ২৬/১১ মুম্বাই হামলার স্মৃতি কষ্ট দেয় মানুষকে, টানা তিনদিন তাজের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন রতন টাটা

Prosun Kanti Das

Published on:

Advertisements

26/11 Terror Attack: চলতি বছরেই মৃত্যু হয়েছে টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটার। বার্ধক্যজনিত কারণে ৮৬ বছর বয়সেই তিনি চলে যান সকলকে ছেড়ে। তার মৃত্যুশোক এখনো অব্দি দেশবাসী ভুলতে পারেনি। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করার সময় দেশের মানুষ আবারও মনে করিয়ে দিয়েছে ভারতের সবথেকে অন্ধকার সময়ের কথা। সময়টা ছিল ২০০৮ সালের ২৬ শে নভেম্বর। সন্ত্রাস হামলায় কেঁপে উঠেছিল ভারত, কিন্তু সেই কঠিন পরিস্থিতিতে শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রতন টাটা। সন্ত্রাসী হামলাতে নিজের স্টাফদের পাশ থেকে সরে দাঁড়াননি তিনি।

Advertisements

৭০ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী ২০০৮ সালে দেখেছিল এক ভয়ঙ্কর ট্রাজেডি। যার রীতিমত স্তম্ভিত করে দিয়েছিল গোটা মুম্বাইকে। ক্ষতি হয়েছিল টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম আইকনিক তাজমহল প্যালেস হোটেলের। কিন্তু সন্ত্রাস হামলাতে (26/11 Terror Attack) তিনি অটল ছিলেন, শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তার কর্মীদের। ২৬শে নভেম্বর ২০০৮ সালে, প্রায় দশজন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল দক্ষিণ মুম্বাইতে। তারা মুম্বাইতে প্রবেশ করে এবং তাজ হোটেল এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস সহ একাধিক স্থানে গুলি চালায়। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নির্বিচার হামলায় ১৬৬ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

Advertisements

আরো পড়ুন: দানধ্যান ছিল তার জীবনের মূল মন্ত্র; তার মোট সম্পত্তি অবাক করার মত

নিহতদের মধ্যে, তাজ হোটেলে ৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, যার মধ্যে ১১ জন কর্মচারী ছিল যারা ৬০ ঘন্টা অবরোধের সময় অতিথিদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছিল। এই ভয়ঙ্কর অগ্নিপরীক্ষার সময়, রতন টাটা অসাধারণ সংকল্প এবং মানবতা প্রদর্শন করেছিলেন। স্মৃতির পাতা উল্টালে মনে পড়ে যাবে তার অবদানের কথা। তাজ হোটেলের কোলাবা প্রান্তে দেখা গিয়েছিল রতন টাটাকে। তিন দিন ও রাতের জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল, যখন নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের থেকে নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করেছিল।

Advertisements

আরো পড়ুন: রতন টাটা সম্পর্কে জানুন এই অজানা তথ্য, শ্রদ্ধা বাড়বে নিঃসন্দেহে

হামলার পর, রতন টাটা প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন তাজ হোটেল পুনরায় চালু করার। এই প্রতিশ্রুতি তিনি মাত্র এক মাসের মধ্যে পূরণ করেছিলেন। আরও গুরুত্বপূর্ণ, তিনি নিহতদের পরিবারের যত্ন নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রিপোর্ট অনুসারে, রতন টাটা নিশ্চিত করেছিলেন মৃতদের পরিবারগুলি এবং তাদের প্রিয়জনেরা সারাজীবনের জন্য বেতন পাবেন। এছাড়াও, সহায়তা করার জন্য তাজ পাবলিক সার্ভিস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, রতন টাটা ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িতে গিয়ে তাদের যত্ন নেওয়া হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতেন।

একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বর্ণনা করেন যে, সন্ত্রাস হামলার খবর পেয়ে তিনি ছুটে গিয়েছিলেন হোটেলের সামনে। হোটেল কর্মীদের পাশে থাকাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য। হোটেলের কর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেছিল নিজেদের দায়িত্ব পালনের। তারা মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে অনেকেই এই প্রক্রিয়ায় নিহত হয়েছে। যারা তাজ হোটেলের বাইরে দোকানদারি করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের জীবন বাঁচানোর চেষ্টাও তিনি করেছিলেন। ওই সময় তিনি সকলকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। ২০২০ সালে, মুম্বাই হামলার (26/11 Terror Attack) বার্ষিকীতে, টাটা ইনস্টাগ্রামে একটি হৃদয়গ্রাহী বার্তা পোস্ট করেছিলেন, মুম্বাইয়ের লোকেরা ট্র্যাজেডির সময় যে ঐক্য দেখিয়েছিল এটা ছিল তারই প্রতিফলন। তিনি আরো লিখেছেন যে, ওই কঠিন সময়ে সমস্ত রকম ভেদাভেদকে দূরে সরিয়ে মুম্বাই একত্রিত হয়েছিল।

Advertisements