Ratan Tatas Pets: তাঁর হাসিমুখ চিরকাল অম্লান থাকবে এবং তাঁর পোষ্যপ্রেম নেট দুনিয়াতে বরাবরই চর্চিত থাকবে। গতকাল দেশের শিল্পজগতে ঘটেছে নক্ষত্রপতন এবং দেশ এক বড় সম্পদ হারিয়েছে। টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটা কুকুর কতটা পছন্দ করতেন তা সকলেই জানে। সোশ্যাল মিডিয়াতে মাঝেমধ্যেই তাঁর প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি শুধুমাত্র পশুদের ভালবাসতেন তা নয়, তাদের খেয়াল রাখার সম্পূর্ণ চেষ্টা করতেন। এমনকি টাটা গ্রুপের গ্লোবাল হেডকোয়ার্টারে পথ কুকুরদের জন্য একটি ক্যানেল তৈরি করা হয়। পোষ্যরা ছিল তাঁর কাছে খুবই আদরের। তাই তাদের নাম নির্বাচনও তিনি অনেক ভেবেচিন্তে করতেন।
‘গোয়া’ নাম শুনে হয়তো ভাববেন এটা কোন জায়গার নাম কিন্তু না এটি হল তাঁর প্রিয় পোষ্যের (Ratan Tatas Pets) নাম। তাঁর সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট থেকে তার পশুপ্রেম সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়। তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে যেসব পোস্ট করেছেন সেটাই প্রমাণ করেন তিনি একজন প্রকৃত পশুপ্রেমিক ছিলেন। এমনকি গোয়া’ রতন টাটার সঙ্গে অফিসে অনেকটা সময় কাটাত। ‘হিউম্যান অফ বম্বে’ সংস্থার সিইও ক্যারিশ্মা মেহেতা ‘লিঙ্কন্ড ইনে’ তাঁর এক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছিলেন। একটি ইন্টারভিউয়ের জন্য রতন টাটার সঙ্গে দেখা করতে তিনি গিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের অফিসে। ‘গোয়া’ সেসময় ঘোরাফেরা করছিল অফিসেরই প্রাঙ্গণে। তিনি অবশ্য গোয়াকে দেখে রীতিমত ভয় পেয়েগেছিলেন, কারণ কুকুরের প্রতি তার ভীতি অনেক আগে থেকে।
পরবর্তীকালে অবশ্য রতন টাটা বলেছিলেন ওই মেয়েটি যে ভয় পেয়েছে সেটি তার আচরণ থেকে স্পষ্ট বোঝা গেছে। ‘গোয়া’কে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘ভালো ছেলের মতো চুপ করে বসো।’ ক্যারিশ্মা মেহেতা জানান, ইন্টারভিউ এর জন্য তিনি রতন টাটার সঙ্গে প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলেন কিন্তু ‘গোয়া’ ঠিক একই জায়গায় বসেছিল। শুধু তিনি যে পশুদের (Ratan Tatas Pets) ভালবাসতেন তা নয়, পশুরাও তাঁর কথা মেনে চলত।
রতন টাটার (Ratan Tata) কুকুর প্রীতির গল্প আমরা প্রায়ই দেখতে পেতাম ইনস্টাগ্রামে। সব থেকে অবাক করার বিষয় হলো , তিনি রাস্তার কুকুরদের দত্তক নিতেন। যত্ন করে পুষতেন, সেবা করতেন। তাঁর অফিসের সামনে যেসব রাস্তার কুকুর ছিল তাদেরকেও তিনি যথেষ্ট খেয়াল রাখতেন এবং ভালোবাসতেন। তাও আবার মাটিতেও বসে পড়ে। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে এ কথা জানা গেছে।
আরো পড়ুন: অবশেষে চুক্তি স্বাক্ষর হলো এই আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে, কোন নতুন ব্যবসায়ে প্রবেশ করলেন রতন টাটা
তাঁর আরেকটি প্রিয় কুকুর (Ratan Tatas Pets) হলো ‘স্প্রাইট’। এই নামটিও তার দেওয়া ছিল। তবে দুঃখজনক ঘটনা হলো দুর্ঘটনায় তার পিছনের পা দুটি বাদ হয়ে যায়। একেবারে আশঙ্কাজনক অবস্থা থেকে তাকে তুলে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন রতন টাটা। আশ্চর্যের কথা হলো কুকুরটির পিছনের পায়ে তিনি লাগিয়ে দিয়েছেন হুইল চেয়ারের মতো দুটি চাকা। এরফলে স্প্রাইট আবার আগের মতো চলাফেরা করতে শুরু করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি আবেদন জানিয়েছিলেন কুকুরটিকে দত্তক দেওয়ার জন্য।
তিনি গত বছরই বর্ষাকালে কুকুর-বিড়ালদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছিলেন রতন টাটা। তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন যে, বৃষ্টির মরশুমে গাড়ি স্টার্ট করার আগে অবশ্যই তার নীচ ভালো করে খেয়াল করে দেখবেন। বর্ষাকালে বহু কুকুর, বিড়াল বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য গাড়ির নীচে আশ্রয় নেয়। তাদের যাতে কোনভাবে প্রাণহানি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলেছেন তিনি। গতকাল তাঁর মৃত্যুতে রীতিমতো পিতৃহারা হয়ে পড়েছে ‘গোয়া’, ‘স্প্রাইট’দের মতো একাধিক পোষ্য (Ratan Tatas Pets)।