নিজস্ব প্রতিবেদন : আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন মূলধন ব্যাঙ্কে বিভিন্ন আকারে রেখে থাকি। কেউ জীবনের সঞ্চিত অর্থ ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে সঞ্চয় করেন, কেউ আবার তাদের উপার্জনের সঞ্চিত অর্থ ফিক্সড ডিপোজিট অথবা অন্যান্য বিভিন্ন উপায়ে ব্যাঙ্কে সঞ্চয় করে রাখেন। কিন্তু ভারতে পরপর দুটি ব্যাঙ্ক পিএমসি ব্যাঙ্ক ও ইয়েস ব্যাঙ্কে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেওয়ায় রীতিমত শঙ্কিত দেশের ব্যাঙ্ক আমানতকারীরা। তাদের মধ্যেও একটাই প্রশ্ন, “আমাদের উপার্জিত অর্থ ব্যাঙ্কে রাখাটা সুরক্ষিত তো?”
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই মনে করছেন আর তাদের টাকা ব্যাঙ্কে রাখাটা আর নিরাপদ নয়। বছরের পর বছর ধরে কষ্টার্জিত অর্থ ব্যাঙ্কে রাখার পর সেই ব্যাঙ্ক যদি হঠাৎ করে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়ে যায় তাহলে তাদের টাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হবে। আর এমন প্রশ্ন উঠতেই ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া প্রশ্নের সম্মুখীন। তবে তারা অবশেষে ব্যাঙ্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজেদের বিবৃতি প্রকাশ করল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাদের টুইটার হ্যান্ডেলে এমন একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
ব্যাঙ্কের আমানত নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠার মুহূর্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, “দেশের প্রতিটি ব্যাঙ্কের আর্থিক পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ব্যাঙ্কে আমানতকারীদের ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থ পুরোপুরি সুরক্ষিত।” অর্থাৎ এই বিবৃতির মাধ্যমে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া দেশের মানুষদের আশ্বস্ত করেছে।
Concern has been raised in certain sections of media about safety of deposits of certain banks. This concern is based on analysis which is flawed. Solvency of banks is internationally based on Capital to Risk Weighted Assets (CRAR) and not on market cap. (1/2)
— ReserveBankOfIndia (@RBI) March 8, 2020
পাশাপাশি তারা এও জানিয়েছে, “ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থের নিরাপত্তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ প্রশ্ন তুলছে। যে ধরনের বিশ্লেষণের উপর এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে সেই বিশ্লেষণ ত্রুটিপূর্ণ। কোন ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হবে কিনা তা মার্কেট ক্যাপ নয় বরং আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে মূলধনের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়।”
RBI closely monitors all the banks and hereby assures all depositors that there is no such concern of safety of their deposits in any bank. (2/2)
— ReserveBankOfIndia (@RBI) March 8, 2020
তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া যতই বিবৃতি প্রকাশ করুক না কেন মাত্র ছয় মাসের মধ্যে পরপর দুটি ব্যাঙ্কের এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিপুল পরিমাণে ভীতির সঞ্চয় হয়েছে তা অনস্বীকার্য। বিজেপি সরকার ২০১৪ সালে কেন্দ্রের শাসনে আসার পর দেশে ডিজিটাল লেনদেনের ওপর বারংবার জোর দিয়েছে। কিন্তু এই মোদি সরকারের আমলেই পরপর দুবার ব্যাঙ্কের এই হাল হয় স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ডিজিটাল লেনদেন নিয়েও। এখন দেখার বিষয় এই ভীতি মানুষের মন দূর করতে কি পদক্ষেপ নেয় কেন্দ্র সরকার।