Ratan Tata: হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি! তবুও কেন রতন টাটার নাম আম্বানি আদানিদের মতো নেই ধনকুবেরদের তালিকায়?

Prosun Kanti Das

Published on:

That is why Ratan Tata is not named in the list of billionaires despite having assets of thousands of crores of rupees: টাটা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির সাথে আমরা প্রায় সবাই কমবেশি পরিচিত। এই সংস্থার কর্ণধার শিল্পপতি রতন টাটা। (Ratan Tata) এমন কোন ব্যবসা নেই যেখানে টাটা কোম্পানির কোন অংশীদারিত্ব নেই। গাড়ি, হোটেল, রিটেইল, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিবহন, ধাতু, খনি ও রসায়ন ইত্যাদি প্রায় সব ক্ষেত্রে ব্যবসায়িকভাবে অংশ নিয়েছে টাটা গ্রুপ। আর্থিক সম্পত্তির পরিমাণও নেহাত কম নয়। এতগুলি বিজনেস সামলানোর কারণে বাৎসরিক আয় প্রায় কয়েক লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু তবুও ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকায় তার নাম নেই। ভারতীয় ধনকুবেরদের কথা উঠলেই সাধারণত আম্বানি পরিবার কিংবা আদানিদের নামই বেশি উঠে আসে। কিন্তু বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও, তালিকায় কেন নাম নেই রতন টাটার?

সমাজসেবী, শিল্পপতি এবং টাটা সনসের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন নোভেল টাটা। ১৯৯০ থেকে ২০১২ সাল অব্দি সমগ্র টাটা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি টাটা গ্রুপের দাতব্য ট্রাস্টের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। তার জন্ম ১৯৩৭ সালে। ৮৬ বছর বয়সে এসেও দক্ষ হাতে সামলাচ্ছেন ব্যবসা। ২০০৮ সালে তাকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে পুরস্কৃত করা হয়। তার জনহিতকর কাজকর্মের জন্য এবং শিল্পপতি হিসেবে তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কিন্তু তারপরও তার নাম নেই ধন কুবেরদের তালিকায়।

রতন টাটা (Ratan Tata) ব্রিটিশ রাজত্ব চলাকালীন মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মুম্বাইয়ের ক্যাম্পিয়ন স্কুলেই তার স্কুল জীবন কেটেছে। এরপর টাটা কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে আর্কিটেকচারের স্নাতক হন। তার শিক্ষা জীবন যতটা সুন্দর ভাবে কেটেছে ততটাই প্রশংসিত তার কর্মজীবনও। শুধু ব্যাবসায়িকভাবে না বিনিয়োগকারী হিসেবেও তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। তিনি বহু স্টার্ট আপ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন। কিছু কিছু সংস্থায় বিনিয়োগ করেছেন নিজেই, আবার কিছু সংস্থার বিনিয়োগ করিয়েছেন তার বিনিয়োগকারী সংস্থাগুলির মাধ্যমে।

আরও পড়ুন 👉 Tata Motors: রতন টাটার স্বপ্ন পূরণ, ইভি গাড়ি বিক্রিতে নতুন অধ্যায় লিখল টাটা মোটরস

এত কিছুর পরও তার নাম নেই ভারতের ধনকুবেরদের তালিকায়। তবে তার একটি বিশেষ কারণও রয়েছে। ২০২২ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকায় ৪২১ নম্বরে নাম রয়েছে রতন টাটার (Ratan Tata)। ২০২১ সালে তার নাম ছিল ৪৩৩ নম্বরে। ২০২১ শে তার সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩৫০০ কোটি টাকা ২০২২ এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮০০ কোটি টাকা। যেখানে আম্বানি বা আদানিদের সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক লক্ষ কোটি টাকা সেখানে রতন টাটার সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র কয়েক কোটি টাকা। তবে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে রতন টাটা যা আয় করেন তা কিন্তু কম নয়। ২০২২ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, মার্চ মাস অব্দি তার মোট আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২১ সালেও তার সামগ্রিক আয়ের পরিমাণ ছিল ৯.৬ লক্ষ্য কোটি টাকা। কিন্তু এত পরিমাণ অর্থ উপার্জন করার পরও সম্পত্তির নিরিখে তিনি জায়গা করে নিতে পারেননি ধন কুবেরদের তালিকার প্রথম সারিতে।

সম্পত্তির নিরিখে রতন টাটার (Ratan Tata) পিছিয়ে থাকার ক্ষেত্রে বিশেষ কারণ রয়েছে। টাটা গ্রুপের পক্ষ থেকে একটি ট্রাস্টি বোর্ড চালানো হয়। এই ট্রাস্টটি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জীবিকা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দ করে থাকে। রতন টাটার সমস্ত সম্পত্তির বেশিরভাগই আয় হয় টাটা সনসের মাধ্যমে। আর এই টাটা সন্সের প্রাপ্ত লাভের ৬৬ শতাংশ ধার্য করা রয়েছে টাটা ট্রাস্টের নামে। টাটা গ্রুপের বেশিরভাগ শেয়ারই রয়েছে অন্যান্যদের হাতে। নিজেদের হাতে শেয়ারের খুবই সামান্য অংশ রেখেছেন তাঁরা। আর তাই আর্থিক দিক থেকে আম্বানিদের সমকক্ষ হয়ে ওঠা হয়নি টাটাদের। ভারতীয় ধনকুবেরদের তালিকায় নাম না উঠলেও মানুষের মনে কিন্তু জায়গা করে নিয়েছে টাটা গ্রুপ।