দুর্গা প্রতিমা বানাতে কেন বেশ্যালয়ের মাটি দরকার

Sangita Chowdhury

Updated on:

Advertisements

নিজস্ব প্রতিবেদন : দেবী দুর্গার প্রতিমা নির্মাণের সময় পতিতালয়ের (বেশ্যালয়) মাটি দরকার হয়‌, একথা সকলেরই জানা। কিন্তু কেন দেবী প্রতিমা নির্মাণের সময় পতিতালয়ের মাটি দরকার হয়, এই প্রসঙ্গে অনেক ভ্রান্ত ও মনগড়া ধারণা প্রচলিত থাকলেও সঠিক তথ্য আমাদের জানা নেই।

Advertisements

Advertisements

আসলে দেবী দুর্গার নবকন্যার রূপের মধ্যে একটি রূপ হল পতিতা। আর বাকি আটটি রূপ হল, ১) নর্তকী অথবা অভিনেত্রী, ২) কাপালিক, ৩) ধোপানী, ৪) নাপিতানী, ৫) ব্রাহ্মণী, ৬) শুদ্রাণী, ৭) গোয়ালিনী এবং ৮) মালিনী (আর একটি রূপ হচ্ছে পতিতা যা পূর্বেই উল্লেখিত হয়েছে)।

Advertisements

এই নয়টি রূপকে মায়ের রূপ বলে ধরা হয়। তাই এই নয়টি গৃহের মাটি ছাড়া মায়ের রূপ নির্মাণ হয় না। দেবীর প্রতিমা নির্মাণের জন্য এই নয় শ্রেণীর নারীর বাড়ি থেকেই মাটি নিয়ে আসা হয়। অন্যান্য শ্রেণীর নারীদের মতো পতিতালয়ের মাটিও সেই কারণেই নিয়ে আসা হয়।নয় শ্রেণীর নারীর গৃহ থেকে মাটি নিয়ে আসার পর উক্ত নয় শ্রেণীর কন্যাদের কুমারী রূপে পুজো করতে ও দান সামগ্রী দিতে হয়। তবেই প্রতিমা প্রাণ পায়।

আসলে দেবীর নবদুর্গার রূপ বিশ্লেষণ করলে সহজেই বোঝা যায় যে এটি একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। একটি উচ্চ মার্গের দর্শন। দেবী দুর্গা যে সমগ্র নারীজাতির প্রতিভূ, তাই এর মধ্য দিয়ে বোঝানো হয়। পতিতার মত শুদ্রাণী, নাপিতানী, গোয়ালিনী, ব্রাহ্মণী প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার অংশ। প্রত্যেকেই দেবী দুর্গার অভিন্ন রূপ। অর্থাৎ কেউ ছোট নয় কেউ বড় নয়, প্রত্যেকেই সমান। এই সমদর্শনই প্রকাশ পায় দেবী দুর্গা প্রতিমার মধ্য দিয়ে।

নারী সে যে জাতির অথবা যে শ্রেণীর হোক সে যে শক্তিময়ী সনাতনী এটিই শাক্ত দর্শনের মূল কথা। আর এই কারনেই দেবী দুর্গার রূপ নির্মাণের জন্য নয় রূপের নারীর গৃহ থেকেই মৃত্তিকা নিয়ে আসা হয়।

Advertisements