করোনায় স্বস্তি ভারতের, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় মৃত্যুর হার সবথেকে কম

নিজস্ব প্রতিবেদন : বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। নতুন অবতারে আবির্ভাব হওয়া এই ভাইরাসের প্রতিরোধে কোন ভ্যাকসিন না থাকায় থামানো যাচ্ছে সংক্রমণের গতি। চীনের উহান প্রদেশে ৮ই ডিসেম্বর কোভিড-১৯ এর সন্ধান পাওয়া যায়। চীন থেকে দ্রুত তা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। জানুয়ারির ৩০ তারিখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বজুড়ে জারি করে ইমারজেন্সি।

এই করোনা ভাইরাস অনেক আগেই থামানো সম্ভব হতো যদি চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আগেই সঠিক তথ্য দিতো বলে অভিযোগ তুলেছে বিশ্বের বহু দেশ। অভিযোগ উঠেছে করোনা ভাইরাস চীনের কৃত্রিম উপায়ে তৈরি। সেই সঙ্গে অভিযোগ উঠেছে সংক্রমণের সংখ্যা ও মৃত্য হারের তথ্য লুকাচ্ছে চীন সরকার। যদিও চীন সরকার এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ইটালি, স্পেন, ইংল্যান্ডের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাড়িয়ে আমেরিকায় এখন করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার সর্বাধিক। যদিও চীন, ইউরোপ, আমেরিকার তুলনায় ভারত সহ পূর্ব ও পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে সংক্রমণের ব্যাপকতা তুলনামূলক ভাবে কম।

করোনা ভাইরাস দ্রুত বদলে নিচ্ছে তার রূপ। এই মুহূর্তে ২০০টি‌ প্রজাতিতে সে বিভক্ত। তার মধ্যে চীন, ইরান, ইউরোপ ও আমেরিকায় এই প্রজাতির মারণ ক্ষমতা সবচেয়ে মারাত্মক।
যে কারণে করোনা ভাইরাসের গতি প্রকৃতি বুঝতে বিজ্ঞানীদের বুঝতে সবচেয়ে অসুবিধা হচ্ছে, তা হল কোভিড-১৯ তাঁর জীবনকাল শেষ হওয়ার আগেই সে নিজের মিউটেশন ঘটিয়ে নতুন রূপে যৌবন ফিরিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে তাঁর মারণ ক্ষমতা কিছুতেই কমছে না।

এই মুহূর্তে আমেরিকায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৩ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৯৩ হাজার ৫৩৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ১৮০ জন।
ইংল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪০৫ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৩৪ হাজারের কাছাকাছি। ইটালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৮০ জন। মৃত্যুর সংখ্যা ৩২ হাজারের উপর।

সে তুলনায় এশিয়ার দেশগুলিতে সংক্রমণ তীব্র আকার নেয়নি। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষের ওপর। মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ১৬৩ জন। ইরানে ১ লক্ষ ২২ হাজার ৪৯২ জন আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৫৭ জনের। যদিও চীনের পরিসংখ্যান বলছে আক্রান্ত হয়েছে ৮৪ হাজার ৬৩ জন। মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৩৮ জন।

পরিসংখ্যান বলছে করোনা ভাইরাস যেভাবে ইউরোপ, আমেরিকাকে আঘাত করেছে সেভাবে এশিয়ার দেশগুলিকে এখনও আঘাত করতে পারেনি। গোটা বিশ্বে এই ভাইরাসে প্রতি লাখে মৃত্যু হয়েছে ৪.১ জনের। আমেরিকায় লাখে মৃত্যু হয়েছে ২৬.৬ জনের। ইউনাইটেড কিংডমে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৫২.১ জনের। ইতালিতে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৫২.৮ জনের। ফ্রান্সে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৪১.৯ জনের। স্পেনে লাখে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৫৯.২ জনের। ব্রাজিলে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৭.৫ জনের। বেলজিয়ামে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৭৯.৩ জনের। এই সংখ্যাটার হার বিশ্বের সব দেশের তুলনায় বেশি।

জার্মানিতে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৯.৬ জনের। ইরানে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৮.৫ জনের। কানাডায় লাখে মৃত্যু হয়েছে ১৫.৪ জনের। নেদারল্যান্ডে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের। মেক্সিকোতে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। চীনে লাখে মৃত্যু হয়েছে ০.৩ জনের। তুর্কিতে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। সুইডেনে লাখে মৃত্যু হয়েছে ৩৬.১ জনের। আর ভারত, ভারতে বিশ্বের অন্যান্য সব দেশের তুলনায় কম। ভারতে ১৯ শে মে পর্যন্ত লাখে মৃত্যু হয়েছে মাত্র ০.২ জনের। যা অবশ্যই স্বস্তি ভারতীয়দের কাছে।