নিজস্ব প্রতিবেদন : শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নানান দুর্নীতিতে জর্জরিত পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিয়োগ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকশো শিক্ষকের চাকরি নিয়ে চলছে টানাটানি। তবে এমন পরিস্থিতিতেই নজির গড়ার প্রচেষ্ঠায় ছিলেন পড়শী রাজ্য বিহারের এক অধ্যাপক।
বিহারের ওই অধ্যাপক ক্লাসে কোন পড়ুয়া না পেয়ে পড়াতে পারেননি। আসলে তিনি যে বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন সেখানে কোন পড়ুয়া ছিল না। যে কারণে তাকে নিযুক্ত করা অর্থাৎ শিক্ষাদানের জন্য সেই কাজ করতে না পেরে বিবেকের দংশনে ওই অধ্যাপক ৩ বছরের ২৪ লক্ষ টাকা বেতন ফিরিয়ে দিতে আবেদন করেছিলেন। তবে এরপর ঘটে যায় আলাদা রকমের ঘটনা।
ওই অধ্যাপকের ফিরিয়ে দেওয়া টাকা নিতে রাজি হয় নি কলেজ নিয়ন্ত্রক বিহার আম্বেদকর বিশ্ববিদ্যালয়। জানা যাচ্ছে ওই অধ্যাপকের নাম লাল্লন কুমার। তিনি বিহারের মুজাফফরপুরের নিতিশ্বর কলেজের হিন্দি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক। কিন্তু ওই কলেজে এই বিভাগে ছাত্র সংখ্যা একেবারেই শূন্য। যে কারণে তিনি একজন ছাত্রকেও পাঠদান করার সুযোগ পান নি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই অধ্যাপকের বক্তব্য, যখন কোন ছাত্র নেই তখন শিক্ষক হিসাবেও তার কোন কাজ নেই। তিনি কিসের ভিত্তিতে এই বেতন নেবেন? এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই কলেজে তার অধ্যাপনার দু’বছর নয় মাসের মোট বেতন ২৩ লাখ ৮ হাজার টাকা ফেরত দিতে চান। পাশাপাশি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ওই কলেজ থেকে বদলি চেয়েছেন।
যদিও ওই কলেজে ছাত্র উপস্থিতির সংখ্যা শূন্য তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মনোজ কুমার। তার কথা অনুযায়ী, ছাত্র সংখ্যা একেবারেই নেই এটা ভিত্তিহীন। তবে করোনাকালে দু’বছর ধরে পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে। তবে সে যাই হোক এই অধ্যাপকের এমন বিবেক দংশন এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যখন আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে সেই সময় ওই অধ্যাপক আবার অন্য কথা বলছেন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, আবেগের বশে মাইনে ফেরত দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছিলেন তা ঠিক নয়।