কলকাতা: ‘সঞ্জয়কে কবে থেকে চিনতেন?’ কেবলমাত্র এই একটি প্রশ্নই করা হয়েছিল কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্তকে (ASI Anup Dutta)। মঙ্গলবার তিনি যখন সিবিআইয়ের ডাকে সিবিআই দফতরে যান সেই সময় এমন প্রশ্ন করা হয়। তবে এমন একটি প্রশ্ন থেকে বাঁচতে তিনি যে ম্যারাথন দৌড় লাগিয়ে দেবেন তা কেউই ভেবে উঠতে পারেননি। এমনকি সাংবাদিকদের প্রশ্ন থেকে বাঁচার জন্য ছুটতে গিয়ে একাধিকবার পড়তে পড়তেও বাঁচেন।
সাংবাদিকদের তরফ থেকে তাকে বারবার বলা হয়, ‘পড়ে যাবেন অনুপ বাবু’। তবে এএসআই অনুপ দত্ত নিজের পড়া বাঁচাকে তোয়াক্কা না করেই ছুটে সিবিআই দফতরে প্রবেশ করে। সিবিআই দফতরে প্রবেশ করার সময় তাকে আবার রীতিমতো কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ধাক্কাও মারতে দেখা যায়। এদিন সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে গিয়ে সাংবাদিক দেখতেই চোখে সরষে ফুল ফোটে ওঠে তার। বাকিটা ইতিহাস।
আরজি কর কাণ্ডে অভিযুক্তের গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাম জড়াতে শুরু করে ওই এএসআই অনুপ দত্তের। এরপরই সিবিআই অনুপ দত্তকে তলব করেন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। সিবিআইয়ের সেই তলবের পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি এদিন এসেছিলেন সিজিও কমপ্লেক্সে। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন অনুপ দত্তকে তলব করলো সিবিআই? অন্যদিকে কেন এমন ভাবে তিনি ছুটে ছুটে সাংবাদিকদের এড়িয়ে সিজিও কমপ্লেক্সে প্রবেশ করেন?
আরও পড়ুন : RG Kar Case: আরজি কর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে আর কোপ নয়, লালবাজারকে ধুয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
আরজি কর কান্ডে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয় ব্যারাক থেকে। ব্যারাক থেকে সঞ্জয় রায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে কে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তা নিয়েই উঠছিল প্রশ্ন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের একাংশ স্বীকার করে নিয়েছেন, অনুপ দত্তই নাকি তাকে ব্যারাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এরপরই অনুপ দত্তকে নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এবং সেই সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই হয়তো সিবিআই তাকে তলব করেছে।
Kolkata Police ASI Anup Dutta sprinting away when a journalist questioned his closeness with the RG Kar case accused Sanjay Roy. pic.twitter.com/32ckXFzjjb
— BanglaXp Official (@BanglaXpBengali) August 20, 2024
অনুপ দত্ত একজন এসআই র্যাঙ্কের পুলিশ অফিসার হলেও বাহিনীতে তার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। তিনি কলকাতা পুলিশের ওয়েলফেয়ার কমিটির মিডিল র্যাঙ্কের নেতা হওয়ার পাশাপাশি প্রথম সারির নেতা তপন মাইতির ঘনিষ্ঠও। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে অনুপ দত্তের যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্জয় রায়কে তিনি ব্যারাকে থাকার অনুমতি দিয়েছিলেন। অন্যদিকে অনুপ দত্তের সঙ্গে সঞ্জয় রায়ের একাধিকবার ফোনে কথোপকথন হয়েছে এবং সেই সকল কথোপকথনের কল লিস্ট সিবিআইয়ের হাতেই ইতিমধ্যেই এসেছে বলেও জানা যাচ্ছে।