লাল্টু : দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল অবস্থা। বারংবার প্রশাসন থেকে অন্যান্যদের দ্বারস্থ হয়েও কোনও সুরাহা না মেলায় অবশেষে পথ অবরোধে নামেন মহিলারা। শুধু পথ অবরোধ বললেও ভুল হবে, টানা ৪ ঘন্টা পথ অবরোধ করে নিজেদের দাবী দাওয়ার কিছুটা হাসিলও করে নিলেন তারা।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত হেতমপুরের প্রতীচী পাড়ায়। এই পাড়ার উপর দিয়ে দুবরাজপুর থেকে হেতমপুর পর্যন্ত রাজ্য সরকারের যে রাস্তাটি গেছে সেই রাস্তার বেহাল অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে। রাস্তার বেহাল অবস্থার পাশাপাশি দিনরাত ভারী গাড়ি যাতায়াতের কারণে ধূলোয় ধূলোময় গোটা এলাকা। পাশাপাশি স্থানীয়দের অভিযোগ, অতিরিক্ত যানবাহনের দাপটে এলাকার ছোট ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধদের বাড়ি থেকে বের হওয়া দায় হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, যানবাহন চলুক তাতে কোনো অসুবিধে নেই। তবে রাত নেই, দিন নেই ভারি ভারি যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে চালানো যাবে না। আর যদি যানবাহন চালাতেই হয় তাহলে আগে রাস্তার মেরামতি করাতে হবে। আর এই সকল অভিযোগ এবং দাবি-দাওয়া নিয়ে এদিন এলাকার গৃহবধূ থেকে বৃদ্ধারা রাস্তার উপর চেয়ার পেতে বসে পড়েন। সকাল ১১ টা থেকে শুরু হয় অবরোধ। দীর্ঘক্ষন ধরে অবরোধের কারণে যানজট সৃষ্টি হয় এলাকায়। অবরোধকারীদের দাবি ছিল যতক্ষণ না জেলাশাসক ঘটনাস্থলে আসবেন ততক্ষণ অবরোধ তোলা হবে না।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থলে পৌঁছান দুবরাজপুর থানার ওসি দেবব্রত সিনহা, হেতমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহঃ জসিমউদ্দিন, এবং এলাকার বিধায়ক নরেশ চন্দ্র বাউড়ি। আর তাদের আশ্বাসে অবশেষে দুপুর তিনটের সময় অবরোধ তুলে নেন অবরোধকারীরা।
তবে অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে অবরোধকারীরা প্রশাসনের থেকে বেশ কিছু দাবিদাওয়া পূরণ করে নেন। যেমন যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়েন, ধুলোবালি থেকে এলাকাকে মুক্ত করতে জলের ব্যবস্থা করা, রাস্তার উপর পড়ে থাকা জঞ্জাল সরিয়ে ফেলা ইত্যাদি।
[aaroporuntag]
প্রসঙ্গত, এই রাস্তার উপরেই রয়েছে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, হেতমপুর রাজবাড়ী, হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ, হেতমপুর রাজ বিদ্যালয়ের মতো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। আর এই সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি থাকা সত্ত্বেও যেভাবে এই রাস্তাটিকে গুরুত্বহীনভাবে দীর্ঘদিন ধরে রাখা হয়েছে তা নজিরবিহীন। কারণ রাজ্য সরকারকে বারংবার রাজ্যের রাস্তার উন্নয়ণ নিয়ে ফলাও করতে দেখা গেছে। অথচ সেই জায়গায় কেন এই রাস্তাটি এতদিন ধরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে তাই এখন প্রশ্নের সম্মুখীন।