ফাইট করছেন ঐন্দ্রিলা। সত্যিই একেই বলে অলৌকিক, পরিস্থিতি নিয়ে জানালেন সব্যসাচী

Antara Nag

Published on:

Advertisements

অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার আরোগ্য কামনায় অধীর আগ্রহে গোটা দিন কাটিয়েছে টলিউড তথা অভিনেত্রীর অনুরাগীরা। প্রত্যেকেরই মুখে একই কথা, ঈশ্বর যেন কোন অলৌকিক ঘটনা ঘটান। সকলের প্রার্থনার জোরে সত্যিই ঘটলো সেই অলৌকিক ঘটনা। হাসপাতালের বেডে নড়ে উঠলো ঐন্দ্রিলার হাত। এই নিয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট করে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন সব্যসাচী চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, “পরশুদিন সকালে ঐন্দ্রিলার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। চোখের সামনে দেখলাম ওর হার্টরেট ড্রপ করে ৪০-এর নীচে নেমে তলিয়ে গেলো। মনিটরে ব্ল্যাঙ্ক লাইন… কান্নার আওয়াজ… তার মাঝে ডাক্তাররা দৌড়াদৌড়ি করছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে হৃদস্পন্দন ফের ফিরে এলো বিভিন্ন সাপোর্টে। হার্টবিট ১২০। তারপরই কে যেন একটা অদৃশ্য বালিঘড়ি উল্টো করে ঝুলিয়ে দিল। ঝুরো বালির মতন সময় ঝরে পড়ছে। সঙ্গে স্থির ভাবে একটা একটা করে হার্টবিট কমছে। কমছে রক্তচাপ। কমছে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস।”

Advertisements

তিনি আরও লেখেন, “ডাক্তাররা জবাব দিয়েছেন, হাসপাতালের নীচে পুলিশ পোস্টিং। বিভিন্ন বিশিষ্ট মানুষ এসে সমবেদনা জানাচ্ছেন। কিছু উত্তেজিত ইউটিউবার এবং মিডিয়ার লোকজন নিচে ঘোরাঘুরি করছেন। শেষ চেষ্টার জন্য অন্য হাসপাতালের এক নামকরা নিউরোসার্জনকে ডেকে আনা হলো, তিনি খানিক নাড়াচাড়া করে বললেন, ‘চলে গেছে অনেক আগেই, শুধুশুধু এইভাবে আটকে রাখছেন কেন? এমনিতেও কালকের মধ্যে সব থেমেই যাবে। লেট হার গো পিসফুলি। রাত বাড়ল, দাঁতে দাঁত চিপে একটা ছোট্ট অসাড় হাত ধরে বসে আছি, চোখদুটো অনেক আগেই ডাইলেটেড হয়ে গেছে, একটা করে বিট কমছে আর অসহায়তা বাড়ছে, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আগেই দেখা করে গেছে। লোকজন মাঝেমধ্যেই ফোন করে জিজ্ঞাসা করছে যে ‘আজ রাতেই হবে? নাকি সকালে আসবো?”

Advertisements

তারপর তাঁর সংযোজন “ইতিমধ্যে ফেসবুকের কল্যাণে কারা যেন মাঝরাতে ছড়িয়ে দিয়েছে যে ঐন্দ্রিলা আর নেই। বানের জলের মতন হুহু করে ফোন ঢুকতে শুরু করলো, সৌরভ শুটিংয়ে বাইরে গেছে, দিব্য একা সামলাতে পারছে না। অগত্যা ঠেকা দেওয়ার জন্য আমি পোস্ট করতে বাধ্য হলাম, মিনিট কুড়ির মধ্যে আবার সব শান্ত। সকাল থেকে রক্তচাপ কমতে শুরু করলো, ওর বাবা-মা কে ডাকলাম, বাকিদের খবর দিলাম। গতকাল আর বাধা দিইনি কাউকে, সারাদিন ধরে কাছের মানুষরা এসেছে, ওকে ছুঁয়েছে, ডুকরে কেঁদেছে। কত স্মৃতিচারণ, কত গল্প।”

Advertisements

বিমর্ষ হয়ে সব্যসাচীর বলেন, “বিকেলের পর দেখলাম হাত, পা, মুখ ফুলছে ঐন্দ্রিলার, শরীর ঠান্ডা। হার্ট রেট কমতে কমতে ৪৬, বিপি ৬০/৩০। আগের দিনের ডাক্তারের কথাটা কেবলই আমার মাথায় ঘুরছিলো, ওর শরীরটাকে এভাবে আটকে রাখার জন্য নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে, থাকতে না পেরে ওর মাকে বললামও যে এত কষ্ট আর দেখতে পারছি না, কি দরকার ছিল এত কিছু করার, শান্তিতে যেত। মুখে বলছি বটে, কিন্তু ছাড়তে কি আর পারি, মায়ার টান বড় কঠিন।”

তারপরেই আসে খুশির খবর। অভিনেতা জানান “ঠিক রাত আটটায় যখন আমি বিমর্ষমুখে নিচে দাঁড়িয়ে, হঠাৎ হাত নড়ে ওঠে ঐন্দ্রিলার। খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখি হার্টরেট এক লাফে ৯১। রক্তচাপ বেড়ে ১৩০/৮০, শরীর ক্রমশ গরম হচ্ছে। কে বলে মিরাকেল হয় না? কে বলে ও চলে গেছে? এক প্রকার অনন্ত শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এলো মেয়েটা। গেছে বললেই ও যাবে না কি, যেতে দিলে তো যাবে। এই মুহূর্তে ঐন্দ্রিলা একপ্রকার সাপোর্ট ছাড়াই আছে, এমন কি ভেন্টিলেশন থেকেও বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আগে ক্লিনিক্যালি সুস্থ হোক, নিউরোর কথা পরে ভাবব।”

Advertisements