স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে রামপুরহাট বেড়াতে এসে আর ফেরা হলো না নবদম্পতির

Shyamali Das

Published on:

নিজস্ব প্রতিবেদন : সবেবরাতের ছুটিতে স্বামীকে নিয়ে বাপের বাড়ি বেড়াতে এসে আর ফেরা হলো না শ্বশুরবাড়ি। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে বাকি পাঁচ জনের সঙ্গেই জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হলো নবদম্পতিকে। এই ঘটনা আরও শোকাহত করেছে রামপুরহাটকে। শুধু রামপুরহাট নয়, এর পাশাপাশি একই কারণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নানুরেও।

বীরভূমের নানুরের দান্য গ্রামের কাজী নুরুল জামালের ৩১ বছর বয়সী ছেলে কাজী সাজিদুর রহমানের সঙ্গে গত জানুয়ারি মাসে বিয়ে হয় রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের মিরাজুল শেখের মেয়ে লিলি খাতুনের। সুখেই তাদের সংসার চলছিল। কিন্তু এই সুখের সংসারে অন্ধকার নেমে এলো সোমবার রাতে।

দিন কয়েক পরেই রয়েছে রমজান মাস। এই রমজান মাসের আগে শবেবরাতের ছুটি পেয়ে সাজিদুর স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান শ্বশুরবাড়ি বগটুই। সোমবার দুপুর বেলায় তারা দুজনে পৌঁছান ওই গ্রামে। বিকাল এমনকি সন্ধ্যাবেলা সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। এর পরেই সাড়ে আটটা নাগাদ ১৪ নং জাতীয় সড়কের ধারে বোমার আঘাতে মারা যান বরশাল গ্রামের উপপ্রধান ভাদু সেখ।

ভাদু শেখ মারা যাওয়ার পরেই যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে তাদের বাড়িতে শুরু হয় অত্যাচার অগ্নিসংযোগ বলে অভিযোগ। আর এই অগ্নিসংযোগের ঘটনাতেই সেখানে বাকি পাঁচ জনের সঙ্গে জ্বলন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় সাজিদুর এবং তার স্ত্রী লিলির।

সাজিদুর পেশায় একজন মাদ্রাসা কর্মী। মৃত্যুর আগে দুপুর বেলা এবং বিকাল বেলায় তার সঙ্গে তার বাড়ির লোকজনদের কথা হয় ফোনে। কিন্তু তারপরেই যে এমন মর্মান্তিক এবং নৃশংস ঘটনা ঘটে যাবে তা কারোর মধ্যে উপলব্ধি ছিল না।

সাজিদুরের বাবা নুরুল জামাল জানিয়েছেন, “ছেলে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পর সাধারণ ভাবেই আমাদের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। কেউ কিছু বুঝতেই পারিনি রাতে এমন ঘটে যাবে। এমনকি সকাল পর্যন্ত জানতাম না এমনটা হয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের খবর দেওয়া হয় এইরকম পরিণতি হয়েছে।”

এর পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, মাঝরাতে সাজিদুর তার বন্ধু মহিমকে ফোন করে প্রাণে বাঁচানোর আর্তি জানিয়েছিল। পুলিশ পাঠাতে বলেছিল। কিন্তু তারপরে ফোন কেটে যায় এবং আর যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাজিদুরের পরিবারের সদস্যরা দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন।