লাল্টু : বেতন মাত্র ৭৫ টাকা। আর এই ৭৫ টাকার মধ্যেই তাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্যাকসিন নিয়ে যেতে হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী এই ৭৫ টাকা বহু ক্ষেত্রে যাতায়াতেই খরচ হয়ে যায়। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এই টাকায় সংসার চালানো সম্ভব নয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বেতন বৃদ্ধি সহ ৭ দফা দাবিতে কাজ বন্ধ রাখলেন ভ্যাকসিন বাহক এই সকল মেডিসিন কর্মীরা।
বুধবার সকাল থেকে দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ৪০ জন ভ্যাকসিন বাহক স্বাস্থ্যকর্মী কাজ বন্ধ রেখে ধর্মঘট শুরু করেন। যতক্ষণ না ব্লক মেডিকেল অফিসার তাদের আশ্বাস দেবেন ততক্ষণ এই বিক্ষোভ চলবে বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। আর তাদের এই বিক্ষোভের জেরে সাব-সেন্টারগুলিতে আসা গর্ভবতী মা থেকে শুরু করে শিশুদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তা অনিবার্য। তবে ঐ সকল স্বাস্থ্যকর্মীরা আজকের দিনে দাবি দাওয়া পূরণের জন্য কাজ বন্ধ রাখবেন তা আগাম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়ে রেখেছিলেন সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ তারিখ থেকে। আর এরপরেও কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিল না তা নিয়েই এখন উঠছে প্রশ্ন। কারণ এদিন ভ্যাকসিন সেন্টারগুলিতে ভ্যাকসিন না পেয়ে গর্ভবতী মা এবং শিশুরা যেভাবে সমস্যায় পড়েছেন তার দায়িত্ব কার ওপর বর্তাবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
ভ্যাকসিন বাহক এই সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের মূল দাবী হল বেতন। তারা জানিয়েছেন, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় এই ভ্যাকসিন বহন করার জন্য তাদের ৭৫ টাকা দেওয়া হয়। যদি ভ্যাকসিন বেঁচে যায়, তাহলে তা ফেরত আনার জন্য পাওয়া যায় আরও ৭৫ টাকা। কিন্তু সাধারণত ফেরত আসেন না। মোটের উপর কাজের দিন দৈনিক আয় মাত্র ৭৫ টাকা। সে ক্ষেত্রে দেখা যায় দূর-দূরান্তের সাব-সেন্টারগুলিতে ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই খরচ হয়ে যায়। এরপর আবার এই কাজ প্রতিদিনের নয়। সুতরাং সারা মাসে যে রোজগার হয়ে থাকে তা দিয়ে বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে সংসার চালানো দুরূহ ব্যাপার।
এই দাবি ছাড়াও তাদের আরও ৬টি দাবি দাওয়া রয়েছে। যেগুলির মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি দাওয়া হল বেতন প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়ম চলবে না। এছাড়াও রয়েছে সপ্তাহে ৫ দিন কাজের নিশ্চয়তা প্রদান করা, প্রত্যেক ভ্যাকসিন বাহক স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিচয়পত্র প্রদান করা, করোনাকালে নিরাপত্তা প্রদান করা, বর্ষাতি প্রদান করা এবং যশপুর সাব-সেন্টারে লজিস্টিক ক্যারিয়ারের লোক দিয়ে কাজ করাতে হবে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাদের দৈনিক ৩০০ টাকা বেতন করতে হবে। পাশাপাশি দাবিমতো অন্যান্য চাহিদাগুলি পূরণ করতে হবে। যদিও এই বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বিএমওএইচ ডাঃ গৌরব বাইনের তরফ থেকে কোনো রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।