নিজস্ব প্রতিবেদন : বাড়ি তৈরীর কাজ করার সময় মোহর ভরা কলসি পাওয়া গিয়েছে এমন গল্প ফেঁদে সোনার নকল করেন বিক্রির চক্র নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই চক্র চলছে বীরভূমের বেশ কিছু এলাকায়। এই চক্রের জাল কলকাতা এবং শহরতলী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে, সূত্রের খবর এমনটাই। এই চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্য বীরভূম জেলা পুলিশের তরফ থেকে বিভিন্ন সময়ে নানান ধরনের সচেতনতা মূলক প্রচার চালানো হয়ে থাকে। তবে তা সত্ত্বেও এমন ঘটনার বিরাম নেই।
সম্প্রতি বীরভূমের শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ এমন প্রতারণামূলক ঘটনায় দুজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ হানা দিয়ে শান্তিনিকেতন থানার কঙ্কালীতলার একটি গেষ্ট হাউজ থেকে ওই দুজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি এই ঘটনায় পুলিশ ২৪৫টি নকল কয়েন উদ্ধার করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কিভাবে চলে এই চক্র?
প্রতারকরা এই চক্র চালানোর জন্য কোন এক ব্যক্তিকে টার্গেট করেন। টার্গেট হওয়া ব্যক্তির নম্বরে ফোন যায়। ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দেওয়ার জন্য লোকও রয়েছে। এখন ফোন করে ওই ব্যক্তিকে মোহর ভর্তি কলসির পাওয়া গিয়েছে এই গল্প শোনানো হয়। ফোনের ভঙ্গি এবং গল্প এমনভাবে তৈরি করা হয় যে ওই ব্যক্তি নিজেই প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে বসেন।
এরপর প্রতারকরা টার্গেট হওয়া ওই ব্যক্তির বাড়িতে অথবা কোন একটি নির্দিষ্ট স্থানে একটি সোনার কয়েন নিয়ে যান। তারপর বলা হয় যেকোনো সোনার দোকানে গিয়ে এই সোনার কয়েন বা মোহর পরীক্ষা করে নেওয়ার জন্য। পরীক্ষা করার পর ওই ব্যক্তির সাথে প্রতারকরা গল্প আরও দীর্ঘায়িত করেন। এমন নানান প্রতারণার গল্প শোনাতে থাকেন। যাতে টার্গেট হওয়া ওই ব্যক্তির বিশ্বাস আরও তৈরি হয়।
এরপর যখন প্রতারকরা বুঝতে পারেন যে টার্গেট হওয়া ব্যক্তি তাদের জালে পা দিয়েছেন সেই সময়ে ওই ব্যক্তির মোবাইলে মোহর ভর্তি কলসির ছবি পাঠানো হয়। তারপর টাকা নিয়ে ডেকে পাঠানো হয় নিজেদের ডেরায়। পরে ওই ব্যক্তি নিজেদের ডেরায় এলে তার থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে সমস্ত কিছু লুট করে নেওয়া হয়।
অনেক ক্ষেত্রে আবার প্রতারকরা সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলার জন্য পরিস্থিতি বুঝে ভীর ট্রেনে বাসে এমন মোহর ভর্তি কলসি পাওয়ার গল্প জুড়ে বসেন। সেসব ক্ষেত্রে অনেকে নিজেরাই এই প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন। এমন প্রতারণা চক্রের পাল্লায় পড়ে বিভিন্ন এলাকার অজস্র মানুষ প্রচুর টাকা খুইয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।